করোনাকালে তারকাদের ঈদ

শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০২০ | ১০:৫৮ অপরাহ্ণ

করোনাকালে তারকাদের ঈদ

বছরে একবারই কোরবানি দিতে হয়। পরিস্থিতি বুঝেই কোরবানি দেয়ার নিয়ম। বিশ্বজুড়ে মহামারী চলছে। কোথাও কমছে না। আমাদের দেশেও দিন দিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে কোরবানি দেয়া এমনকি বাইরে যাওয়ার সাহসও পাচ্ছি না। বেঁচে থাকলে কোরবানি দিতে পারব অনেক। যেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, তাই কোরবানির সমপরিমাণ টাকা মানুষকে দিয়ে দেব উপহার হিসেবে। এ নিয়ে অবশ্যই মাসালাহ আছে। আমরা তা মেনেই কোরবানি আদায় করব। আমি বাসা থেকে বের হই না। ঈদেও বের হব না। বাসায় বসেই পরিবারের সবাই মিলে ঈদ পালন করব। আমি আশা করি, আমাদের অন্য সহকর্মীরাও কোরবানির বিষয়টি নিজ দায়িত্বে ভেবে আদায় করবেন। সবার সুস্থতা কামনা করছি।

– রুনা লায়লা, সঙ্গীতশিল্পী

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই বলা যায়, আমরা কিন্তু খুব ভালো নেই। বাইরে যাওয়াটা খুব মুশকিল। তাই এবার ভেবেছি পশু কোরবানি দেব না। হিসাবমাফিক কোরবানির টাকা নিরীহ-মেহনতি মানুষ এবং এতিমখানায় দিয়ে দেব। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে কোরবানি দিতে পারব। এখন বাইরে না যাওয়া মানেই নিজেকে নিরাপদ রাখা। তাই ঈদের দিনেও বাইরে যাব না। বাসায় থেকে ঈদ উদযাপন করব। আল্লাহ আমাদের নিরাপদে রাখুন এটাই দোয়া করি। আর যারা পশু কোরবানি দেবেন ভাবছেন তারা অতি সতর্কতা অবলম্বন করে যেন কোরবানি দেন এটাই প্রত্যাশা থাকবে। – সাবিনা ইয়াসমিন, সঙ্গীতশিল্পী

 

করোনার মধ্যে আমরা গরিব-দুঃখী ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এখনও নিয়মিত করে যাচ্ছি। কোরবানির ঈদেও তাদের প্রতি বিশেষ নজর থাকবে। বরাবরই আমরা কোরবানি দেই গরিবদের জন্যই। এতিমখানায় মাংস পাঠিয়ে দেই। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি বলে আমাদের প্রতিদিনই অফিসে যেতে হয়, তবে খুবই সতর্কতার সঙ্গে আমরা বাইরে যাই। স্বাস্থ্যবিধি পুরোটাই মানি এবং ফ্যাক্টরির সবাইকে মানতে সচেতন করি। এবার করোনার সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্যা। ঈদের পর বন্যার্তদের বড় আকারে সাহায্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ জন্য আমরা বন্যাকবলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যাব, সেখানে নিজেরা উপস্থিত থেকে সহায়তা করব। যদিও আমরা প্রতি বছরই বন্যার্তদের পাশে সাধ্যানুযায়ী দাঁড়াই। আমরা বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ করব, গরিব ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ান, বন্যার্তদের সাহায্য করুন, তারা আপনার-আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের মহামারী ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে অতিদ্রুতই মুক্তি দেন।

– অনন্ত ও বর্ষা, অভিনয়শিল্পী

সবকিছু কেমন যেন অচেনা অচেনা মনে হচ্ছে এখন। সবসময় ঈদের সময় সবার মধ্যে কেনাকাটা কিংবা বাড়ি ফেরা নিয়ে চাঞ্চল্য লক্ষ করা গেছে; কিন্তু গত রোজার ঈদ থেকে সেই পরিবেশ আর নেই। সবাই একে অন্যকে এভয়েড করছে। এটি অবশ্যই নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখার জন্য। তারপরও যেহেতু ঈদ আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব, তাই প্রতিকূল পরিবেশেও ঈদের প্রস্তুতি চলছে এখন। বরাবরের মতো এবারও গরু কোরবানি দেব। প্রতিকূল পরিবেশের কারণে নাটকে অভিনয়ও করেছি কম। অনেক কাজের প্রস্তাব থাকলেও মাত্র ছয়টি নাটকে অভিনয় করেছি। এদিকে অন্য সময় ঈদে ব্যাপকভাবে মার্কেটিং করা হতো; কিন্তু এবার ঈদে শপিং করার কোনো ইচ্ছাও নেই। এ ধরনের ঈদ যেন জীবনে আর না আসে, সেই প্রার্থনা করছি। কারণ কোনো কিছুই স্বাভাবিকভাবে করা যাচ্ছে না। তারপরও সবাই যেন আনন্দে ও নিরাপদে থাকেন এ কামনা করছি।

– জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, অভিনয়শিল্পী

কোরবানি তো দিতে হবে। এটি আমার ওপর আল্লাহর নির্দেশ ও গরিবের হক। এবারও কোরবানি দিচ্ছি। তবে বরাবরের চেয়ে একটু বেশিই মনোযোগ থাকবে গরিবদের জন্য। বলা যায় এবারের কোরবানির হক পুরোটাই গরিবের। সাধ্যানুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। রোজার ঈদে বাসাতেই ছিলাম। এবারও বাসাতেই থাকব। বিশেষ প্রয়োজন না হলে বের হব না। করোনা আসলে সবকিছু বদলে দিয়েছে। জানি না কবে এ মহামারী থেকে মুক্তি পাব, আবার কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব! কিংবা আদৌ যাব কি-না সেটিও জানি না। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, শিগগিরই যেন তিনি আমাদের এ মহামারী থেকে মুক্তি দেন।

– শাকিব খান অভিনয়শিল্পী

গত রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদও স্বাভাবিক পরিবেশে হচ্ছে না। চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদিও আগের তুলনায় এখন মানুষের চলাফেরা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও আমি বাসাতেই অবস্থান করছি। এ ঈদেও নতুন কোনো নাটকে অভিনয় করিনি। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফেরার ইচ্ছা নেই। ঢাকায় থাকলেও গ্রামের বাড়িতে কোরবানি দেব। কোরবানির পর গ্রামের গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে সেই গোশত পৌঁছে দেয়া হবে। জীবনে এ পরিবেশে ঈদ পালন করতে হবে তা কল্পনাও করিনি। তারপরও বলব, সবাইকে সাবধান ও সচেতন থাকতে হবে। কোনোভাবেই যেন জনসমাগম তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এ ভাইরাস থেকে যেন সবাইকে তিনি রক্ষা করেন।

 

– নুসরাত ইমরোজ তিশা, অভিনয়শিল্পী

আমি আগে সবসময় সিরাজগঞ্জে আমার নিজ এলাকায় ঈদ করতাম। বাবা-মাসহ সবাইকে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতাম। বাবা-মা বেঁচে নেই এখন। তারপরও ইচ্ছা আছে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করার। এ ছাড়া এলাকার মানুষের সঙ্গে স্বল্প পরিসরে কুশলবিনিময় করার ইচ্ছা আছে। তবে কোরবানি দেব ঢাকায়। কিছুদিন আগে শুটিং করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এখন পুরোপুরি সুস্থ আছি। অসুস্থতার জন্য অনেক কাজ বাতিল করেছি। তারপরও আমার অভিনীত বেশকিছু নতুন নাটক প্রচার হবে টিভিতে। তবে এ রকম প্রতিকূল পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে হবে, যা কখনও কল্পনাও করিনি। যেহেতু এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তাই সবাইকে নিরাপদ ও সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা কিংবা কাজকর্ম করতে হবে। এ অবস্থায় আমি এ ঈদেও শপিং করতে যাইনি। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আরও অনেক ঈদ করতে পারব।

– জাহিদ হাসান, অভিনয়শিল্পী

এবার পশু কোরবানি দেয়া হবে না। আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে সেই ব্যবস্থা নেই। আমি চাইলে অন্য কোথাও থেকে কোরবানি দিতে পারতাম; কিন্তু তা-ও করছি না। কোরবানির সমপরিমাণ টাকা আমি অসহায়দের দিয়ে দেব। দেশের পরিস্থিতি খুব একটা এখনও ভালো হয়নি যে, নিজেরা বাইরে যাওয়ার সাহস দেখাব। বাসায় থেকেই কাজ করছি। ঈদের দিনেও বাসায় থাকব। আমি মনে করি, সচেতন নাগরিক হিসেবে সবারই এ বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এবার পশু কোরবানির বদলে নিরীহ, কর্মহীন মানুষদের কোরবানির সমপরিমাণ টাকা দিয়ে দিলে ভালোই হবে। আশা করি, এটি সবাই মেনে চলবেন।

– রিয়াজ, অভিনয়শিল্পী

Development by: webnewsdesign.com