ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ এইটটিন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ‘যুদ্ধ বাঁধলে চীন নয়, ভারতের পাল্লাই ভারী থাকবে’। সেখানে কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।তবে গণমাধ্যমটির উল্লেখিত তথ্যে চীনের সামরিক শক্তিই বেশি দেখানো হয়েছে। এদিকে, কিছু দিন যাবৎ ভারত-চীন সীমান্তে উত্তপ্ত হচ্ছিল পরিস্থিতি। মঙ্গলবার রাতে যা চূড়ান্তে পৌঁছায়। ২০জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। অনেকেই আহত। কাঁটা লাগানো লোহার রড দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ভারতীয় সেনাবাহিনীর।
মঙ্গলবার রাত থেকেই লাদাখের গালওয়ানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় ভারত চীন সংঘাত চরমে পৌঁছায়। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও। চীনেরও ৪৩ জন সেনা ভারতের পাল্টা জবাবে নিহত এবং আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই। এই সবের ফলে দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধ শুরু হলে ক্ষমতা ও শক্তির নিরিখে কোন দেশকে এগিয়ে রাখা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নানা দিক খতিয়ে দেখে, তাঁরা ভারতেকেই এগিয়ে রাখছেন চীনের থেকে। মার্কিন ওয়েবসাইট CNN-এর দাবি শেষবার যখন ভারত-চীন মুখোমুখি হয়েছিল, তখন থেকে বদলেছে পরিস্থিতি। ধীরে ধীরে অনেকটা শক্তি বাড়িয়ে ভারত। দুই দেশের ক্ষমতার মূল্যায়ন করলে কী দাঁড়ায়, দেখে নেওয়া যাক।
পারমাণু শক্তি– বিশ্বের কোনও দেশই চায় না একে অপরের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে। ভারত ও চীনের ক্ষেত্রেও তাই। তবে জানিয়ে রাখা যাক যে, দুই দেশের হাতেই এই ক্ষমতা রয়েছে। ১৯৬৪-এ পারমাণবিক ক্ষমতাশীল দেশ হয় চীন। তবে ভারত সেই ক্ষমতার অধিকরী হয় ১৯৭৪ (১০ বছর পরে)। -স্টকহোম ইন্টারন্যাশনল পিসের রিপোর্ট অনুযায়ী গত বছর ভারতের হাতে আরও ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র এসেছে। -চীনের মোট ৩২০ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, ভারতের ক্ষেত্রে তা ১৫০টি।
সামরিক ক্ষমতা-
চীনের ২৭০টি ফাইটার জেট রয়েছে। ভারতের মাটিতে হামলা চালানোর জন্য ৬৮টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। এই বছর মার্চে বেলফার রিপোর্টে প্রকাশিত খবর যে, চীনা সীমান্তে ভারতীয় এয়ারবেসের সংখ্যা বহু। যার থেকে সহজেই আক্রমণ চালানো যাবে। চীনা বিমানবাহিনীর ৮টি এয়ারবেস রয়েছে সীমান্তে। কিন্তু এগুলি মূলত অসামরিক এয়ারফিল্ডে অবস্থিত। সেখান থেকে হামলা চালানো কিছুটা মুশকিল। তিব্বত ও জিয়াংয়ং এয়ারবেস অনেকটা উঁচুতে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য চীনা বিমান বেশি অস্ত্র নিয়ে উড়তে সক্ষম নয়। বেলফার রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের মিরাজ ২০০০ বা সু ৩০ সব সময়, সব আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম। কিন্তু চীনের জেট জে ১০ সেটা পারে না।
সেনাবাহিনীর ক্ষেত্রে ভারত অনেকটা এগিয়ে। বলা হচ্ছে যে চীনের যুদ্ধের স্মৃতি বহু পুরোন। শেষবার ১৯৭৯-এ ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামিল হয়েছিল চীন যাতে তারা হারে। অন্যদিকে কাশ্মীরে প্রতিনিয়ত পাক সেনার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে ভারতীয় বাহিনী। কার্গিলের স্মৃতিও টাটকা। তাই অভিজ্ঞতার দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে ভারত। তিব্বত ও LAC-তে ভারতের বাহিনীর সংখ্যা প্রায় ২২৫০০০। অন্যদিকে চিনে ক্ষেত্রে সেটা ২০০০০০ থেকে ২৩০০০০। এই সংখ্যাটা খুব সহজে বাড়িয়ে ফেলতে পারে চীন। কিন্তু খারাপ রাস্তার ফলে খুব সহজে চীন এই কাজটা করতে পারবে না। এমনকি অবস্থানগত সুবিধার জন্য তিব্বত সংলগ্ন রেলপথ উড়িয়ে দিতে পারে ভারত, যার ফলে খুবই সমস্যায় পড়তে পারে চীনের।
সূত্র : নিউজ এইটটিন।
Development by: webnewsdesign.com