প্রবাসীদের আচরণে মর্মাহত মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস

সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ | ২:৪৩ অপরাহ্ণ

প্রবাসীদের আচরণে মর্মাহত মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস

কভিড-১৯ করোনাভাইরাস এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে পর্যটন নগরী মালয়েশিয়ায়। তবে টানা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জে রয়েছে সেখানে অবস্থাকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

দীর্ঘ ১ মাস কোয়ারেন্টাইনে থাকায় বেশিরভাগ শ্রমিকদের কাছে এখন নগদ অর্থ নেই। কোম্পানিগুলোর কাজ বন্ধ। সরকার ঘোষিত লকডাউনের সময় বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত পাননি বলে জানিয়েছেন অনেকেই। অনেক কোম্পানিই চাচ্ছে না লকডাউন সময়কালের বেতন শ্রমিকদের বুঝিয়ে দিতে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম নিয়েছে। অবৈধ অভিবাসী যারা রয়েছেন তারা সমস্যার সম্মুখীন বেশি। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের খরচ মেটানোই দায় হয়ে পড়েছে। খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। যার কারণে খাদ্য সংকটেও ভুগছেন অনেকেই। এই লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত বৈধ-অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা।

এদিকে বিভিন্ন দেশে খাদ্য সমস্যায় থাকা প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন প্রবাসীদের বিশাল একটা অংশ। তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, কয়েকজন প্রবাসী দূতাবাস কর্তৃক বিতরণকৃত খাদ্য সহায়তা পেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত বলে তারা জানিয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দূতাবাস থেকে প্রেরিত খাদ্য সামগ্রীর ছবি দিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন অনেকে।

এমন পরিস্থিতিতে রবিবার মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের নিজস্ব ফেসবুক পেজ এ প্রবাসীদের উদ্যেশে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দূতালয় কর্তৃপক্ষ। পাঠকদের জন্য বিজ্ঞপ্তিটি হু- বহু তুলে ধরা হলোঃ-

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
করোনাভাইরাস (COVID-19) প্রতিরোধে মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক জারি করা মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (MCO) এর কারণে কাজকর্ম বন্ধ করে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করতে হচ্ছে এবং চলাফেরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ায় অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনলাইনে ‘খাদ্য চাহিদা ফরম’ পূরণের আহবান জানায়। প্রাপ্ত আবেদনসমূহ যাচাই বাছাই কালে দেখা গেছে অনেকে একাধিক ফরম পূরণ করেছেন, অনেকে পরীক্ষা করার জন্য ফরম পূরণ করেছেন, অনেকে প্রয়োজন নাই বলে জানিয়েছেন এভাবে প্রাপ্ত ৬৫০০ জনকে খাবার সহায়তা প্রদান করার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৮ শ’র অধিক বাংলাদেশি নাগরিকের নিকট খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে গেছে। এ পর্যন্ত কুয়ালালামপুর, পুত্রজায়া এবং সেলাঙ্গর-এর বিভিন্ন এলাকায়/ লোকেশনে অবস্থিত ‘খাদ্য চাহিদা ফরম’ পূরণ করা বাংলাদেশি নাগরিকের আবাসস্থল/ বাসা/বাড়িতে (দোড় গোড়ায়) এ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে অন্যদের নিকট পর্যায়ক্রমে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (MCO), কঠোরভাবে চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং করোনা ভাইরাস (COVID -19) সংক্রমিত হবার আশঙ্কার মধ্যেই নানান নিয়ম কানুন পরিপালন করে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। হাইকমিশন প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশি নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এ মহাদুর্যোগে এগিয়ে আসার জন্য ভলান্টিয়ারদের ধন্যবাদ।

কুয়ালালামপুরে লক ডাউন করা তিনটি ভবনে (সিটি ওয়ান প্লাজা, সেলাংগর ম্যানসন ও মালয়েশিয়ান ম্যানসন) অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিকট খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে এবং করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সারা পৃথিবীতে চলমান এ মহাদুর্যোগের ক্রান্তিকালে হাইকমিশন যখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতা করার ক্ষুদ্র প্রয়াস নিয়েছে তখন এসব নিয়ে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য কেউ কেউ অপচেষ্টা করছে যা খুবই দু:খজনক। যাবতীয় সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটি সুনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতির মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বিধায় বিভ্রান্ত না হবার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হলো। ধন্যবাদ।

Development by: webnewsdesign.com