বিশ্বের সরকাররা কি দিচ্ছে চিকিৎসাকর্মীদের….?

বিশ্বের সরকাররা কি দিচ্ছে চিকিৎসাকর্মীদের….?
মোঃ আলী হোসেন সরকার

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের এর উৎপত্তি হয়।২০২০ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশ ও অধীনস্থ অঞ্চলে ১১ লক্ষ এরও বেশি ব্যক্তি করোনাভাইরাস-এ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬০ হাজার এরও বেশী মৃত্যু বরন করেছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আতঙ্কে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সংকট তৈরি হয়েছে। হাসপাতাল গুলোতে ডাক্তার সংকট। চেম্বার করছেন না অনেকে চিকিৎসক। দেশ জুড়ে এমন স্বাস্থ্য সংকটে জনমনে আতংক তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাসে নয়; অন্য রোগেই এখন দেশের মানুষ চিকিৎসার অভাবে মরতে বসেছে। এটা ভাবতেই যেন গা শিউরে ওঠে। কেন এমন হলো? চিকিৎসকের অভাব আর চিকিৎসার অভাব- এটাতো ভাবনারই বিষয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৮ই মার্চ ২০২০ এ করোনা ভাইরাস সংক্রমনের দেখাদিলে সরকাকারী-বেসরকারী যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে তা ১৭ই মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষনা করা হয় এবং পরবর্তীতে ২৫শে মার্চ থেকে গুরুত্বপূর্ন সরকারী অফিস ব্যাতিত এবং ব্যাংকিং সেবা সীমিত সময়ে এনে সকল শিল্প কারখানা সহ অফিস আদালত বন্ধ ঘোষনার আদেশ করা হয়, যা এখনো ক্রমান্বয়ে বর্ধিত হয়ে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস, বর্তমানে এ রোগ দুনিয়া জুড়ে। আক্রান্ত রোগীর জন্য চাই ডাক্তার। ডাক্তার না থাকলে রোগীরাতো বড় অসহায়। কারা চিকিৎসা দিবেন রোগীদের? ডাক্তার সংকট কেন হলো? করোনা আতংকের মধ্যে শুরুতেই ডাক্তারদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া হয়নি,এটা কিন্তু বড় সত্য। রোগীর অনুপাতে ডাক্তারদের মধ্যে আক্রান্তের পরিমাণ বেশি হওয়ায় চিকিৎসকদের মধ্যে আতংক তৈরি হয়েছে- হওয়ারই কথা। রোগ সারাতে গিয়ে ডাক্তারগণ রোগী হয়ে গেলে কি চলবে? ডাক্তারদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকবেই।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোন দেশই ডাক্তার বা চিকিৎসাকর্মীদের তাদের ব্যক্তিগত কোন বিষয়ের উপর চিন্তা ভাবনা করছে বলে মনে হচ্ছে না। রোগ সারাতে গিয়ে ডাক্তারগণ রোগী হয়ে গেলে তাদের দ্বায়ভার বা তাদের পরিবার এর এই অপূর্নতার প্রমোদনায় কোন পদক্ষেপ কোন দেশেরই সরকার হাতে নেয় নি। আমি মনে করি এই প্রানঘাতি ভাইরাস এর চিকিৎসা মোকাবেলায় যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করছেন তাদের সবাইকে সকল দেশের সরকাররা তাদের কাজ করার উৎসাহিত করনে তাদের কাজের প্রতি বাড়তী সম্মননা প্রদান করা এবং যদি কেহ চিকিৎসা প্রদান কালীন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে কমহলেও ১ কোটি টাকা সমপরিমান আর্থিক সহয়তা প্রদান করা।

যদি এরকম অনুদান বিশে^র প্রত্যেকটি দেশের সরকার দিতো তাহলে চিকিৎসাকর্মীরা আরো আগ্রহ নিয়ে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকতো বলে আমি মনে করছি। এছাড়াও বিশে^র প্রত্যেকটি দেশের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত যতো লোক আছেন এবং দূর্যোগ কালীন যে সকল সেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন তাদের প্রতিও ঠিক এরকম অনুদানের ব্যবস্থা করা উচিত।

করোনা ভাইরাস এমন একটি প্রানঘাতী ভাইরাস যার কাছে কোনো বাছ-বিচার নেই,যাকে সুযোগ পায় তাকেই আক্রমন করে। কে ছোট আর কে বড় তা নির্নয় করার সময় করোনার ভাইরাস এর কাছে নাই।

একটি মানুষের উপর নির্ভর করে একটি পরিবার,হতে পারে সেই লোকটি ঐ পরিবারের আর্থিক যোগানদাতা, যদি সেই মানুষটাও একজন ডাক্তার,চিকিৎসাকর্মী বা আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত নিবেদীত কোন ব্যক্তি হয় তাহলে অবশ্যই তার মনে সবসময় ঘুরপাক খাচ্ছে দুটি কথায়, ১)তার কিছু হলে পরিবারটা সামলাবে কে…? ২) নিবেদীত কাজে সেবা দিয়ে রোগীদের সুস্থ করা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা । মনের মধ্যে এই উদ্দিপনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দিন রাত। তাদের প্রতি রইলো আমার বিন¤্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

তাই আমি মনে করি বিশে^র প্রত্যেকটি দেশের সরকার তাদের বিষয়ে একটু মানবিক বিবেচনা করা। কারন তাড়াও মানুষের ভালোবাসায় নিজের জীবন ঝুকি নিয়ে সেচ্ছায় সেবা দিতে মাঠে নেমেছেন। বর্তমান সময়ে এসব সংকট সহসাই দুর করা না গেলে দেশে স্বাস্থ্য বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করবে। সরকার সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি তা অতি দ্রুত ভাবনায় আনবেন বলেই আশা রাখি। রোগীদের সেবার অন্যতম মাধ্যম চিকিৎসক- এটি বিবেচনায় রাখতে হবে।

লিখেছেন:

মোঃ আলী হোসেন সরকার
প্রধান সম্পাদক
দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া

Development by: webnewsdesign.com