এলাকায় গ্রেপ্তার আতংক

বাউফলে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯

সোমবার, ০৩ আগস্ট ২০২০ | ৮:০৮ অপরাহ্ণ

বাউফলে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯

বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা রাকিব উদ্দিন রোমান (৩৪) ও ছাত্রলীগ নেতা ইশাত তালুকদার (২৪) নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার (২ আগষ্ট) সন্ধায় কেশবপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার পর্যন্ত ঘটনার সাথে জরিত সন্দেহে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বিকেলে কেশবপুর কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাদেরকে দাফন করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে দলীয় কোন্দলের কারণে দুই যুবলীগ কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় সাংসদ আ.স.ম. ফিরোজ আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে বাউফলে এসে পৌঁছেছেন। অপরদিকে গ্রেপ্তার আতংকে ওই এলাকা পূরুষ শূণ্য হয়ে পড়ছে।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু ও সাধারন সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন লাভলুর মধ্যে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরে গত ৩১ জুলাই শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে উভয় গ্রুপের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে সাধারন সম্পাদক সমর্থিত ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে বেধরক মারধর ও কুপিয়ে জখম করে সভাপতি সমর্থিত ইউপি সদস্য যুবলীগ নেতা জিয়াউদ্দিন সুজন ও তার কর্মীরা। আহত অবস্থায় রফিকুলকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এঘটনার পর রফিকুলের অনুসারীরা সভাপতি সমর্থিত কর্মীদের উপর হামলা করে। ওই হামলায় ছাত্রলীগ নেতা বশির ও ইব্রাহিম আহত হলে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল।

 

বরিশালে চিকিৎসা শেষে রোববার সন্ধায় রফিকুল বাড়ি আসে এবং সন্ধায় কেশবপুর বাজারে গেলে যুবলীগ কর্মী রাকিব উদ্দিন রোমান ও ইশাত তালুকদাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে উভয়ের সমর্থকরা লাঠিসোটা ও দেশিও অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে সভাপতি সালেহ উদ্দিন পিকু’র আপন ভাই যুবলীগ নেতা রাকিব উদ্দিন রোমান ও চাচাতো ভাই ইশাত তালুকদার গুরুতর আহত হয়। এদের মধ্যে ইশাত তালুকদার ঘটনাস্থলেই মারা যায় বলে স্থানীয়রা জানান। রোমান ও ইশাতকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আখতারুজ্জান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই নিশাতের মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে রাত নয়টা ২০ মিনিটের সময় রোমানের মৃত্যু হয়। তাদের শরীরে ধারালে অস্ত্রের কোপসহ লাঠির আঘাত ছিল।

জানা গেছে, কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু এবং সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন লাভলুর সাথে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। এর পূর্বেও একাধিকবার উভয় পক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু এ বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দলের উপজেলা পর্যায়ে কোন নেতা হস্তক্ষেপ করেননি। ফলে তাদের মধ্যে বিরোধ চলমান ছিল। এর জের ধরেই এই জোড়া খুন সংঘটিত হয়েছে।

 

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিকেলে কেশবপুর কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাদেরকে দাফন করা হবে। ঘটনার সাথে জরিত সন্দেহে সোমবার পর্যন্ত নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ের করা হয়েছে। সোমবার বেলা ৪ টা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। দাফনের পর হয়তো লিখিত অভিযোগ আসতে পারে। এদিকে জোড়া খুনের পর গ্রেপ্তার অতংকে এলাকা পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে।

Development by: webnewsdesign.com