ট্রেন থামিয়ে বাচ্চা প্রসবে সহযোগিতা করায় সংবর্ধণা পেলেন মোহাম্মদ আলী

রবিবার, ১২ জুলাই ২০২০ | ৭:৫৭ অপরাহ্ণ

ট্রেন থামিয়ে বাচ্চা প্রসবে সহযোগিতা করায় সংবর্ধণা পেলেন মোহাম্মদ আলী

গভীর রাতে চলন্ত ট্রেন থামিয়ে এক গর্ভবতী মাকে সন্তান প্রসবে সহযোগিতা করায় ফুলেল সংবর্ধণা ও দপ্তর প্রধান,পশ্চীম রেলের প্রধান যান্ত্রীক প্রকৌশলী মোঃ কুদরত ই খুদার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ পত্রে ভূষিত হলেন, ঐ ট্রেনের দ্বয়ীত্বরত ক্যারেজ এ্যাটেনডেন্ট মোহাম্মদ আলী।

ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে ট্রেনে গভীর রাতে এক অন্তঃসত্তা নারীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। বিষয়টি টেরপেয়ে,কর্তব্যরত ক্যারেজ এটেন্ডেন্ট মোহাম্মদ আলী ট্রেনটির ভেতর কেন চিকিৎসক ভ্রমন করছেকিনা জানার জন্য পে অপারেটরের মাধ্যমে সন্তান প্রসববেদনা উঠা মাকে সহযোগীতার জন্য আহব্বান করেন। এতে কারো সাড়া না পেয়ে তিনি ৯৯৯ নাম্বারে বিষয়টি অবহিত করে। পরবর্তী নন স্টপেজে স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে ৯৯৯ সেবা কতৃপক্ষ মাকে হাপাতালে নিয়ে নিরাপদে সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করেন।

 

যান্ত্রীক প্রধান প্রোকৌলী মোহাম্মদ কুদরত ই খুদা জানান, ট্রেনটির ক্যারেজ এটেন্ডেন্ট বিষয়টি তাকে অবহিত করলে তিনি তৎক্ষনাত কন্ট্রলে বলে , কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি নাটোর স্টেশন না ধরলেও ওই নারীর প্রসব বেদনা ওঠার পর দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠানোর জন্য জাতীয় জরুরি সেবার নির্দেশে সেটি থামানো হয়। এরপর জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ থেকে পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সে করে রাত ২টার দিকে ওই নারীকে নাটোর জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় জরুরী সেবা থেকে গণমাধ্যমকে বলা হয়, রোববার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত ‘জাতীয় জরুরী সেবা’ ৯৯৯ নম্বরে একটি ফোন আসে। কলার নিজেকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের অ্যাটেনডেন্ট মোহাম্মদ আলী (৩১) বলে পরিচয় দেন। তিনি জানান, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর থেকে রাতে ছেড়ে এসেছে, কুড়িগ্রাম যাচ্ছে। তার ট্রেনে একজন নারী যাত্রী প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন এবং তার রক্তপাত হচ্ছে।

তিনি ইতোমধ্যে ট্রেনে কোনও ডাক্তার যাত্রী আছেন কিনা খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু ট্রেনে কোনও ডাক্তার যাত্রী ছিল না। ট্রেনটি বর্তমানে পাবনা বাইপাস অতিক্রম করছে। ট্রেনটির পরবর্তী স্টেশন বগুড়ার শান্তাহার পৌঁছাতে আরও দুই-আড়াই ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু সেই পর্যন্ত ওই নারীকে এভাবে নেওয়া যাবে না। তাহলে যেকোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাকে দ্রুত হাসপাতালর নিতে হবে। কিন্তু ধারে কাছে কোনও হাসপাতাল নেই। তিনি জাতীয় জরুরী সেবার কাছে সহযোগিতা চান।

 

উপরোক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১২ জুলাই রবিবার সকাল ১১.০০ টায় এ্যাটেনডেন্ট কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সহকর্মী মেহাম্মদ আলীকে(টি,নং-৬৩৫), রাজশাহী রেলওয়ে ষ্টেশনের প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে সংবর্ধনার আয়োজন করে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকারী সভাপতি মোঃ ওয়ালী খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী রেলওয়ে ওপেন লাইনের সাধারণ সম্পাদক আক্তার আলী, তিনি বলেন, এই মোহাম্মদ আলীর মত যদি সবাই নিষ্ঠা ও দ্বায়ীত্ব নিয়ে কাজ করে তাহলে এই রেল খুব তাড়াতাড়ি দেশের উন্নয়ন তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের নাম আসবে। এছাড়াও তিনি দেশের এই দূর্যোগ মুহুর্তে যারা রেলের দ্বায়ীত্ব নিয়ে কাজ করছে এবং করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদেরে জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

 

এসময় অন্যান্নদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী জোনের ওপেন লাইনের সভাপতি জহুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যারেজ ইনচার্জ মোঃ আরিফ, এ্যাটেনডেন্ট কাউন্সিল রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল মৃধা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুন মিঞা, বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগের রাজশাহী জেলা কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সাকিবুল হাসান আজিম, এ্যাটেনডেন্ট কাউন্সিলের অর্থ সম্পাদক শেখ ইসলামসহ রাজশাহী রেলের অন্যান নেতা কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

Development by: webnewsdesign.com