ব্যবসায়ীকে ফাঁদে ফেলে ঘরে আটকে রেখে সুন্দরী নারীর চাঁদা দাবি, অতঃপর

শনিবার, ২৭ জুন ২০২০ | ১২:১২ অপরাহ্ণ

ব্যবসায়ীকে ফাঁদে ফেলে ঘরে আটকে রেখে সুন্দরী নারীর চাঁদা দাবি, অতঃপর

ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবী পুরুষদের ফাঁদে ফেলে বাসাবাড়িতে নিয়ে আটকিয়ে চাঁদা আদায়কারী সুন্দরী ২ নারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। এসময় ফিরোজ আহম্মেদ নামের এক ওষধ ব্যবসায়ী যুবককেও উদ্ধার করা হয়। তিনি উল্লাপাড়া থানার কয়রা খামারপাড়া গ্রামের মোঃ জমশের ফকিরের ছেলে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উদ্ধার হওয়া ফিরোজ আহম্মেদ বাদি হয়ে শাহজাদপুর থানায় ১২ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল শুক্রবার (২৬ জুন) তাদের শাহজাদপুর কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজাদপুর পৌরসভাধীন কান্দাপাড়া মহল্লার জনৈক সন্তেষ এর ভাড়াটিয়া কনা খাতুনের বাসাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ১. সোহেল (২২), পিতা- মোঃ মাজেদ আকন্দ ওরফে মাজন, গ্রাম- গয়হাট্টা, থানা- উল্লাপাড়া, ২. মোঃ আকাশ (২৮), পিতা- মোঃ আয়নুল হক, গ্রাম- কান্দাপাড়া, ৩. মোঃ ছোবহান (৪০), পিতা- মৃত মজিবর রহমান, গ্রাম- দ্বারিয়াপুর, ৪. মোঃ আসাদুজ্জামান শ্যামল (৪০), পিতা- মোঃ আঃ মতিন, গ্রাম- শেরখালী, সর্ব থানা শাহজাদপুর, ৫. মোছাঃ রতনা খাতুন (৩০), স্বামী- মোঃ রেজাউল করিম, পিতা- মোঃ জালাল ওরফে মাজেদ আকন্দ ওরফে মাজন, সাং- কয়রা সরাতলা, থানা- উল্লাপাড়া, ৬. মোছাঃ কনা পারভীন (৩২), স্বামী- মোঃ আলহাজ, সাং- কান্দাপাড়া, থানা- শাহজাদপুর, সর্ব জেলা- সিরাজগঞ্জ।

 

জানা গেছে, উল্লাপাড়া থানার কয়রা খামারপাড়া গ্রামের মোঃ জমশের ফকিরের ছেলে ফিরোজ আহম্মেদের উল্লাপাড়ার কয়রা বাজারে একটি ওষধের দোকান আছে। রতনা খাতুন ওই দোকান থেকে ওষধ নিত এবং সেই সুবাদে ফিরোজ আহম্মেদের মোবাইল নম্বর নিয়ে তার সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলতো। গত বৃহস্পতিবার শাহজাদপুরে অডিসি হোন্ডা শো-রুমে ফিরোজ আহম্মেদ আসবে এ বিষয়টি রতনা খাতুন পূর্ব থেকেই জানতো। ওই দিন ফিরোজ দুপুর ১২টায় শাহজাদপুর বিসিক বাসষ্ট্যান্ডে পৌঁছালে রতনা খাতুনও শাহজাদপুরে এসেছে এবং কোর্ট চত্বরে অবস্থান করছে বলে ফিরোজকে দেখা করতে বলে। এ সময় রতনা খাতুন ফিরোজকে জানায়, এখানে একটা বাড়িতে কাজ আছে, কাজটা শেষ করে উভয়েই একসাথে বাড়ি চলে যাবো।

 

রতনা খাতুনের কথা মত ফিরোজ কোর্ট চত্বরে যায় এবং রতনা খাতুন ফিরোজকে সঙ্গে করে নিয়ে কান্দাপাড়া মহল্লার জনৈক সন্তেষ এর ভাড়াটিয়া কনা খাতুনের ঘরের মধ্যে নিয়ে দরজা লাগিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় রতনা খাতুন ফিরোজ এর কাছে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং টাকা না দিলে ফিরোজকে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হবে বলে জানায়। এসময় রতনা খাতুনের কথায় অন্যান্য আসামিরা ফিরোজ আহম্মেদকে মারপিট করে এবং তার কাছে থাকা ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের স্কিন টাচ্ মোবাইল ও নগদ ২২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আসামিরা বাদীর হাত-মুখ বেঁধে রেখে তারই মোবাইল ফোনে বড় ভাই ফজলুল হককে বিষয়টি জানায় এবং টাকা নিয়ে আসতে বলে এবং টাকা না দিলে তার ছোট ভাইকে খুন করে লাশ গুম করা হবে বলে হুমকি দেয়।

 

বাদির ভাই বিষয়টি শাহজাদপুর থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান পুলিশ টিম পাঠিয়ে উপরোক্ত আসামিদের গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, এই ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে ফিরোজ আহম্মেদ বাদি হয়ে শাহজাদপুরে থানায় চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com