বড়লেখায় করোনার মাঝে ডেঙ্গু আতংক, পৌর মেয়রের দাবী প্রস্তুতি শুরু করেছেন 

শনিবার, ২০ জুন ২০২০ | ৬:১৬ অপরাহ্ণ

বড়লেখায় করোনার মাঝে ডেঙ্গু আতংক, পৌর মেয়রের দাবী প্রস্তুতি শুরু করেছেন 
মৌলভীবাজারের  বড়লেখা পৌরসভা এলাকার বাসিন্দারা এক দিকে করোনা আতঙ্ক, অন্যদিকে মশার উপদ্রপে চরম অস্বস্তিতে। বর্ষা শুরু হতেই দিনে কিংবা রাতে মশার উপদ্রব ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মশার আক্রমণে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। এডিস মশা নিধনে এখনই পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হওয়ার আশংকা রয়েছে। পৌর শহর ও বাসাবাড়িতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেলেও পৌর কর্তৃপক্ষের নেই দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম। এ সুযোগে অনেকটা নির্বিঘনেই পৌর এলাকার বিভিন্ন নালা, ডোবা, পরিত্যক্ত স্থানে বাড়ছে মশার প্রজনন। তবে পৌরমেয়রের দাবী মশা নিধনে তিনি প্রস্তুতি শুরু করেছেন, আগামী সপ্তাহে ওষুধ দেয়া শুরু করবেন।
পৌর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ডের রাস্তাঘাটের পাশে ময়লা আবর্জনা রয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোর নর্দমা ও ড্রেন অপরিচ্ছন্ন। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ কোন রকমের ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। মশক নিধনে বড়লেখা পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মশার উৎপাত মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে। নিয়মিত ময়লা পরিস্কার না করায় দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশও দুষিত হচ্ছে।
সরেজমিনে পৌরসভা এলাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌরশহরসহ আশপাশের বিভিন্ন খোলা স্থান ময়লার ভাগাড়। সেখানে কচুরিপনা ও মশার বাধাহীন বংশবিস্তার ঘটছে। এছাড়া এসব ময়লার ভাগাড়ে বিভিন্ন প্লাস্টিক বক্স ও নারিকেলের খোসা রয়েছে। সে সব স্হানে  জমেতাকা ময়লা পানিতে এডিস মশার লার্বা থাকতে পারে। যেখান থেকে ছড়াতে পারে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস। এসব ময়লার ভাগাড় শুধু এডিশ মশার প্রজনন স্থানই নয়, ময়লা পচা দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশও দুষিত হচ্ছে। এখনই ডেঙ্গু নিধনে পদক্ষেপ না নিলে এলাকায় করোনার সাথে ডেঙ্গুর আক্রমন মারাত্মক আকার ধারণের আশংকা রয়েছে।
শহরের মুন শেরওয়ানী হাউজের স্বত্বাধিকারী তাহমিদ ইশাদ রিপন জানান, পৌর এলাকায় মশার উৎপাত প্রচন্ড রকমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাসা বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। মশার কয়েল জ্বালিয়েও অনেক ক্ষেত্রে রেহাই মিলছে না। মশার ভয়ে দিন-রাত ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। মশা নিধনে এখনো পৌরসভার দৃশ্যমান কোন অভিযান চোঁখে পড়েনি। পৌরসভার বাসিন্দা অধ্যাপক নিয়াজ উদ্দীন জানান, বড়লেখায় বাসা বাড়িতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যা হলে মশার উৎপাতে ছেলেমেয়েরা  ঠিকমতো পড়াশুনা পর্যন্ত করতে পারে না। এখনো মশা নিধনে পৌরসভার  দৃশ্যমান কার্যক্রম লক্ষ করা যায়নি। মশার প্রজনন স্থান ধ্বংসের কোন উদ্যোগ নেই। ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান ও ড্রেনেজ নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পৌরসভার বিভিন্ন নালা, ঝোপঝাড়, আবর্জনার স্তূপে মশা মহামারি আকারে প্রজনন করছে। এসব স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ যদি মশা নিধনের ওষুধ ছিটাত তাহলে মশার বংশবিস্তার কিছুটা হলেও রোধ হতো। এটি না করাতেই ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহিত নানা রোগজীবাণু।
পৌর মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী জানান, এডিস মশার বিস্তাররোধের কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলেও সবকিছুর সমন্বয় করে আমরা ডেঙ্গুর জন্য পূর্বপ্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম হিসেবে ড্রেনগুলোর জলাবদ্ধতা এবং ময়লা-আবর্জনা নিস্কাশনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী সপ্তাহে মশা নিধনের মুল কাজ ওষুধ ছিটানো শুরু করবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস জানান, ‘মশার উপদ্রব আসলেই বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ এমনিতেই প্রচুর চাপে মধ্যে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলে পরিস্থিতি আরো কঠিন হবে। আমরা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে আগাম ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অবগত করেছি। শুধু পৌর এলাকায় নয়। সব এলাকাতেই মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে। বাসা বাড়ির চারপাশ পরিস্কার পরিচন্ন রাখতে হবে।

Development by: webnewsdesign.com