চোরের সাথে পুলিশের সাক্ষাৎ

বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ | ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

চোরের সাথে পুলিশের সাক্ষাৎ

সিলেটের বহুল আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত সিলেটের একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা মাদক ব্যবসা । সালেহ আহমদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সিলেটে জেলা ও এসএমপি পুলিশের কঠোর নজরধারী থাকা সত্যেও আইনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে  তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এ ব্যবসা। তবে সালেহ আহমদকে আটক করলেও কিছু দিন পর জামিনে বেরিয়ে ফের শুরু করে তার মাদকের ব্যবসা।

জানা গেছে, গত ২৬ মে এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশের অভিযানে ইয়াবা সালেহ আহমদের তিন কেজি গাজার চালান আটক করা হয়। সালেহ এর প্রাইভেট কার সিলেট মেট্রো ক- ১১-০০৩৬ নাম্বার এর গাড়ী দিয়ে গাজার চালান নিয়ে সিলেট শহরে প্রবেশ করার সময় মোগলাবাজার থানা পুলিশের পারাইচক মোড়ের চেক পোস্ট আটক হয়। কিন্তু ওই সময় পুলিশের সাথে সালেহ আহমদের একটি লেনদেন হয়। পরে পুলিশ সালেহ ও তার প্রাইভেট কার ছেড়ে দেয় এবং সাথের সহযোগী আয়াজ আলী (৫২)-কে তিন কেজি গাজাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। সালেহ আহমদের রয়েছে পুলিশের সাথে গভির সখ্যতা। তাকে লোকজন পুলিশের লাইনম্যান হিসাবে চিনে।

উক্ত ঘটনায় এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশ বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-(১৭ জিআর নং-৭৩ তারিখ ২৬ মে ২০২০ইং)। এই মামলায় তিন কেজি গাজাসহ প্রধান আসামি গোলাপগঞ্জ থানাধীন ভাদেশ্বর পূর্বভাগ (ফকিরটুল) গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর ছেলে আয়াজ আলী (৫২)-কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়।

২ নং আসামি সিলেট নগরীর সাদিপুরের বাসিন্ধা ও ফেঞ্চুগঞ্জ থানাধীন এলাকার ছত্রিশ গ্রামের মৃত নিমার আলীর ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালেহ আহমদ (৪৫) মামলার পর সালেহ দুইদিন পলাতক থাকলেও গত (২৯মে) মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর দীপন চন্দ্র সরকারের সাথে তার গোপনীয় একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সালেহকে গ্রেফতার না করে এবং চার্জশীট থেকে তাকে বাদ দেওয়ার জন্য বড় অংকের একটি টাকার লেনদেন হয় বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এরপর থেকে সালেহ প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং তার মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিলেট মোগলাবাজার থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর দীপন চন্দ্র সরকার এর সাথে যোগাযোগ হলে তিনি মাদক ব্যবসায়ী সালেহর সাথে সাক্ষাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং মামলা তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান। প্রতিবেদক সালেহকে আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে কোন সদউত্তর না দিয়ে কলটি কেটে দেন।

সূত্রে জানায়, সালেহ আহমদ ভারত থেকে তামাবিল রোডে প্রচুর মাদক দ্রব্য সিলেট শহরে নির্ভিগ্নে প্রবেশ করাতে মোগলাবাজার থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আক্তার হোসেন এর সাথে সালেহর রয়েছে পুরোনো রহমদহম।ওসি আক্তার হোসেন যখন শাহপরান (রহ:) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় তার সাথে সালেহর একটি চুক্তি ছিল। আর সেই চুক্তি এখনো বহাল রয়েছে।

সালেহর বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বিরোধী মামলা থেকে এত মাদকের মামলা থাকা সত্যেও বেশীর ভাগ মামলা গুলো সালেহ টাকার বিনিময়ে মিমাংশা করতে সক্ষম হয়। কারন অবৈধ কাজে হাতে না হতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও সালেহ কিভাবে মামলার চার্জশিট থেকে বেচে যান এ নিয়ে সিলেটের সচেতন মহলের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন?

সিলেটের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাচালানকারীদের গডফাদার লাইনম্যান সালেহ আহমদকে প্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের নিকট আশুহস্থক্ষেপ কামনা করছেন সিলেটের সচেতন মহল।

বর্তমানে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা চলমান রয়েছে

গত ১৬-১০-২০১৯ইং তারিখে সিলেট কোতয়ালী থানায় তার নামে একটি চোরাচালানের মামলা হয়। বর্ডার থেকে নিজে গাড়ী নিয়ে হাতে না হাতে আটক হয় পুলিশের হাতে। সেই মামলা থেকে ও নিজেকে বাচিয়ে নিতে সক্ষম হন ইয়াবা সালেহ।

এ রকম আরো একাট মামলা সিলেট জালালাবাদ থানার মামলা নং- ১৮ জিআর ৫৭ তারিখ- ১৮-০২-২০১৯ইং মামলা থেকে ও অব্যাহতি পান সালেহ।

এরকম আরো অনেক গুলো রাষ্ট্র বিরোধী এবং সরকারবাদী মামলা রয়েছে তার বিরোদ্ধে যার বিবরণ নিম্নে তুলে ধার হলো:-

১। সিলেট জালালাবাদ থানার মামলা নং-১৮/৫৭, তারিখ- ১৮/০৩/২০১৯ ধারা- ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৩২/ ৩৩৩/৩৩৫/৪২৭/১০৯/১১৪ পেনাল কোড তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ৩/৪/৫

২। সিলেট জালালাবাদ থানার মামলা নং-১১/১৭১, তারিখ- ০৬/০৯/২০১৮ ধারা- ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৩(ক)

৩। সিলেট শাহ্পরাণ (রঃ) থানার মামলা নং-২/৬২, তারিখ- ০৬/০৫/২০১৯ ধারা- ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ২৫-ই

৪। সিলেট কোতয়ালী মডলে থানার মামলা নং-১৮/৩৫৩, তারিখ- ১৪/১১/২০১৬ ধারা- ২০০২ সংশোধনী ২০০৯ আইন-শৃঙ্খলা বিঘনকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনরে ৪।

৫। ডিএনপির শ্যামপুর থানার মামলা নং-১৩/৫০, তারিখ- ১৪/০২/২০১৯ ধারা ৪২০/৪০৬/৫০৬ পেনাল কোড।

৬। সিলেট কোতয়ালী মডলে থানার মামলা নং-৮৪, তরিখ- ২৪/০৬/২০০৮ ধারা- ৩৮৫ পেনাল কোড।

৭। সিলেট কতোয়ালী মডলে থানার মামলা নং-৮৫, তারিখ- ২৪/০৬/২০০৮ ধারা- ১৯২৭ সংশোধনী ২০০০ সালের বন্য আইন এর ৪২।

৮। সিলেট কতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ৩১/৫৪৮, তারিখ- ১৬/১০/২০১৯ ধারা- ২৫-ই ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন

৯। সিলেট মোগলাবাজার থানার মামলা নং-১৭/৭৩, তারিখ ২৬/০৫/২০২০ ধারা- ১৯ (ক)

এছাড়াও তার বরিুদ্ধে আরো অনকে মামলা ও জিডি রয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com