জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট জৈনাবাজার, কম দামে হতাশ চাষিরা

শনিবার, ১৩ জুন ২০২০ | ৮:৩০ অপরাহ্ণ

জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট জৈনাবাজার, কম দামে হতাশ চাষিরা

প্রতি বছরের মত এবারও শ্রীপুরের জৈনা বাজারে জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন বিক্রেতারা কাধে, সাইকেলে, ঠেলা, রিকশা ও ট্রাক রিজার্ভ করে কাঁঠালসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল হাটে এনে বিক্রি করছে।

জানা যায়, গাজীপুরকে কাঁঠালের রাজধানী বলা হয়ে থাকে। এখানকার ফল খেতে সুস্বাদু হওয়ায় তার সুনাম ও সুখ্যাতি দেশের সর্বত্রই। তাই ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে এখন সরগরম হয়ে ওঠেছে শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন জৈনা বাজার। কথিত আছে এই কাঁঠালের বাজার দেশের বৃহত্তম। এ বাজার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার কাঁঠাল চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

তবে এ বছর প্রাণঘাতী করোনা ও লকডাউনের কারণে দেশের অনেক জেলা থেকে পাইকার আসতে পারছেন না। যার ফলে কাঁঠালের দাম অনেক কম। কাঁঠাল নিয়ে বিপাকে এবং হতাশায় ভুগছেন বাগান মালিকসহ কাঁঠাল বিক্রেতারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাওনা, গাজীপুর, তেলিহাটি ও শ্রীপুর পৌর এলাকাসহ পাশ্ববর্তী ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাগানিরা কাঁঠালের স্তুপ সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রির অপেক্ষায়। প্রতিটি স্তুপে রয়েছে শ শ কাঁঠাল। পাইকারি ক্রেতারা দরদাম করে কিনছেন কাঁঠাল।

কাঁঠাল বাগান মালিকরা জানান, করোনার কারণে মন্দাভাব বিরাজ করছে জাতীয় ফল কাঁঠালের বাজারে। এবার কাঁঠালের ফলন ভালো হলেও বিক্রি হচ্ছে গত বছরের অর্ধেক দামে।

এদিকে করোনায় বেপারি কম আসায় ভরা মৌসুমে কাঁঠালের যথাযথ মূল্য না পাওয়ার আশংকা রয়েছে তাদের। এ বছর বড় ধরনের লোকসানও গুনতে হবে।

জৈনা বাজার ইজারাদার শাহীন আলম জানান, গত ৫ জুন শুক্রবার থেকে কাঁঠাল বেচাকেনা শুরু হয়েছে। দেশের মধ্যে জৈনা বাজার কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শ্রীপুরের কাঁঠাল সুস্বাদু হওয়ায় দেশের সকল জেলাতে নিয়ে যায় পাইকাররা।

তিনি আরো জানান, করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজি দুরত্ব বজায় রেখে বাজারে কাঁঠাল বেচাকেনা চলছে। এবং ক্রেতা বিক্রেতা উভয়কে এই বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। কাঁঠাল বেচাকেনা চলবে প্রতিদিন সকায় ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে যারা কাঁঠাল বিক্রি করতে আসবে তাদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়া হবে না। করোনার প্রাদুর্ভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ব্যবসায়ীদের থাকার কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকা খাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এস এম মূয়ীদুল হাসান জানান, চলতি মৌসুমে শ্রীপুরে ২ হাজার ৫শ হেক্টর কাঁঠাল চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মৌসুমী ফল কাঁঠালের রয়েছে আর্থিক গুরুত্ব। কৃষকরা এ মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে সংসার পরিচালনার জন্য আয়ের একটি বড় অংশ অর্জন করে থাকে। কাঁঠাল বিক্রি থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হন চাষী থেকে শুরু করে ঠেলাগাড়ী ওয়ালা, রিক্সাচালক, বেপারী ও বাজার ইজারাদার।

Development by: webnewsdesign.com