নরসিংদীতে সংস্কারের অভাবে পলাশ বাজার ব্রিজ এখন মরণ ফাঁদে পরিণত

মঙ্গলবার, ০৯ জুন ২০২০ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

নরসিংদীতে সংস্কারের অভাবে পলাশ বাজার ব্রিজ এখন মরণ ফাঁদে পরিণত

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মিত পলাশ বাজার নামক ব্রিজটিতে দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। বহু বছরের পুরাতন এই ব্রিজটির কোন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। ঘোড়াশাল পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ড কো-অপারেটিভ মোড়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে অবস্থিত ব্রিজটি পলাশ বাজার এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র পথ। যেখানে বসবাস করছে হাজারো জনবসতি।

এ ছাড়া উপজেলার সবচেয়ে বড় কাপড় ও কেনাকাটার বাজার এটি। বাজারের পাশে রয়েছে পলাশ পাইলট নামে একটি বিদ্যালয়। প্রতিদিন স্কুলের শিক্ষার্থীসহ এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করছে হাজারো মানুষ। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, একসময় পলাশ বাজারে যাতায়াতে সড়ক ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ ও ২ নং ইউনিট চালু করলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উত্তপ্ত পানি নদীতে ছাড়ার জন্য কো-অপারেটিভ মোড়ের পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে থেকে শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত একটি খাল খনন করা হয়।

পাশাপাশি বাজারে যাতায়াতের জন্য খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি ব্রিজটি সংস্কার, মেরামত বা পুনঃ নির্মাণ না করায় বর্তমানে ব্রিজটির চার পাশে দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। এছাড়া ব্রিজটির রেলিং এর অনেক স্থান ধসে পড়েছে। বাজারে যাতায়াতে বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় অনেকটা নিরুপায় হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

পলাশ বাজার এলাকায় বসবাসরত ব্যবসায়ী জহির মিয়া জানান, আমার জন্মের পর থেকে ব্রিজটি এ অবস্থায় দেখে আসছি। বহু বছরের পুরাতন হওয়ায় ব্রিজটির ধারণ ক্ষমতা অনেকটা কমে গেছে। যার ফলে অনেক স্থানে ফাটল আর ধস দেখা দিয়েছে। ওই ব্রিজের পাশে মাংস ব্যবসায়ী ইব্রাহিম মিয়া জানান, বাজারের ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহনে ভারী যানবাহন চলাচলের একমাত্র পথ হিসাবে এই ব্রিজটি ব্যবহার করছে।

যানবাহন পারাপারের সময় ব্রিজটি থরথর করে কেঁপে উঠে, মনে হয় যেন এখনই ব্রিজটি ধসে যাচ্ছে। বাজারের পাশে অবস্থিত পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ের ১২’শ ছাত্র-ছাত্রী যাতায়াত করছে। দ্রুত ব্রিজটি মেরামত না করলে যে কোন সময় বড় ধরণের র্দুঘটনা ঘটতে পারে।

এব্যাপারে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিভিল এক্সিয়ান সামসুল আলম জানান, ব্রিজটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করলেও এটি পৌরসভার আওতাধীন। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাইলেও কিছু করতে পারে না।

ঘোড়াশাল পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলি আনোয়ার সাহাৎ জানান, ব্রিজটি পৌরসভার আওতাধীনে পড়লেও সংস্কার কিংবা পুনঃ নির্মাণে পৌরসভার কোন এখতিয়ার নেই। এটি সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণাধীন। এদিকে পৌরসভা ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টানাপড়েনে দিনদিন মরণ ঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে ব্রিজটি। দ্রুত ব্রিজটি পুনঃ নির্মাণ বা সংস্কার করা না হলে বড় ধরণের বিপদের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

Development by: webnewsdesign.com