হবিগঞ্জের মাধবপুরে হাওরে হাঁসের খামার,

সোমবার, ০১ জুন ২০২০ | ৬:৪৪ অপরাহ্ণ

হবিগঞ্জের মাধবপুরে হাওরে হাঁসের খামার,

হবিগঞ্জের মাধবপুরে হাওরে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগতভাবে হাঁস পালনে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষক পর্যায়ে কমবেশি প্রতিটি ঘরেই সীমিত আকারে হাঁস পালন হয়ে থাকে। পাঁচ বছর ধরে বিশাল হাওরজুড়ে ৪০টির মতো হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে। দিন দিন এর খামার বেড়েই চলেছে। ডিমের চাহিদা ও দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক বেকার লোক অন্য খামারিদের অনুসরণ করে হাঁসের খামার গড়ে তুলেছে বৈশাখে বোরো ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকার খামারিরা হাঁসের বাচ্চা কেনা।

শুরু করেন। বাচ্চা রাখার জন্য হাওর এলাকায় উঁচু ভূমিতে ছোট খামার তৈরি করা হয়। মাধবপুর উপজেলার পৌর এলাকায়, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, বাঘাসুরা, বুল্লা, ছাতিয়াইন, আন্দিউড়া, নোয়াপাড়া ভাটি এলাকায় হাঁসের খামার রয়েছে বেশি। এসব ইউনিয়নের হাজার হাজার একর জমি বর্ষা মৌসুমে পানির নিচে তলিয়ে যায়। তখন এসব ভূমিতে কোনো ফসল উৎপাদন হয় না। এসব পতিত হাওরে হাঁসের খামার গড়ে তোলে অনেকেই সফল হয়েছেন। হাঁসের খামার গড়ে তুলতে তেমন পুঁজির প্রয়োজন হয় না। স্বল্প পরিসরে অল্প পুঁজিতে এসব খামার গড়ে তোলা যায়। খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছোট পর্যায়ে

একটি হাঁসের খামার গড়ে তুলতে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পুঁজি হলেই চলে। মাধবপুর উপজেলায় ছোট-বড় ৪০টির বেশি হাঁসের খামার রয়েছে, যা থেকে প্রতিদিন ডিম সংগ্রহ করে পুষ্টির চাহিদা মেটানো হচ্ছে। মাধবপুর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের সফল খামারি মোঃ জাহির মিয়া জানান, বৈশাখ মাসে বাচ্চা তুলে হাঁসের খামার গড়ে তুলেন। তার খামারে এখন ছয় শতাধিক হাঁস রয়েছে। ছয়-সাত বছর ধরে তিনি হাওর এলাকায় এ খামার পরিচালনা করছেন। হাওরে

হাঁস পালনে তেমন খরচ নেই। প্রাকৃতিকভাবেই হাঁস শামুকসহ অন্যান্য খাবার নিজেরা খেয়ে থাকে। তবে মাঝে মধ্যে গম ও ধান খাবার হিসেবে দিতে হয়। তিনি আরও জানান, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বাচ্চা পালনের পর দুই-তিন মাস পর থেকেই ডিম দেওয়া শুরু হয়। একটি ছোট খামারে দুইজন শ্রমিক হলেই হাঁসের লালন-পালন ও দেখভাল করতে পারেন। জগদীশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, মাধবপুরের

ভাটি এলাকায় পতিত জায়গায় বর্ষা মৌসুমে হাঁস পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ডিমের পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব। কারণ বর্ষা মৌসুমে এসব জমি পানির নিচে এমনিতেই পড়ে থাকে। এসব জমি কৃষকের কোনো কাজে আসে না। সরকারিভাবে খামারিদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে হাঁসের খামার সম্প্রসারণ করলে এলাকার খামারিরা আরও বড় পরিসরে হাঁসের খামার গড়ে তুলে লাভবান হতেন। মাধবপুর উপজেলা কৃষি

কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে এসব জমিতে ধান উৎপাদন হয় না। বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে থাকে তাই হাঁসের খামার সম্প্রসারণে। কৃষি বিভাগের কোনো বাধা নেই। মাধবপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবুল কাশেম জানান, মাধবপুরে বিভিন্ন হাওর ও ছোট ছোট খালে ৪০টির বেশি হাঁসের খামার রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে খামারিদের সব রকম পরামর্শ ও হাঁসের চিকিৎসা সুবিধা ও ওষুধ দেওয়া হয়। তবে কৃষকদের সরকারিভাবে কৃষি ঋণসহ কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করলে হাওরে হাঁস পালন দেশে নতুন মডেল হতে পারে।

Development by: webnewsdesign.com