রাবির বন্ধ হলগুলোতে একের পর এক চুরি, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা!

বুধবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৭:১৭ অপরাহ্ণ

রাবির বন্ধ হলগুলোতে একের পর এক চুরি, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা!

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ ৫ মাসের বন্ধ সময়ে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে অবস্থান করছে। আর বন্ধ থাকা আবাসিক হলগুলো থেকে চুরি হওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এসব চুরির ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষদের জানালেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আর এ কারণেই একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে বলেও দাবি করেন সাধারণ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধ হলের ভেতরে চুরির ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। কেননা হলগুলোতে প্রহরী রয়েছে, রুমগুলো তালাবদ্ধ থাকার পরও ভেতরে চুরির ঘটনা ঘটছে। তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? এই ভোগান্তির দায় কার? আমরা মনে করি, এসব চুরির ঘটনার সঙ্গে হলের দায়িত্বরত প্রহরীদেরও সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। তাই এসব চুরি বন্ধে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে হল প্রাধ্যক্ষরা বলছেন, আমরা চুরির ঘটনাগুলো নিয়ে সর্বদা সোচ্চার আছি। প্রতিটি ঘটনা খতিয়ে দেখছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলছেন, হলগুলোর নিরাপত্তাকর্মী ও প্রাধ্যক্ষদের অবহেলার কারণেই এসব চুরির ঘটনা ঘটছে।

 

গতমাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হল থেকে সাইকেল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ করেন। এখন পর্যন্ত তার সাইকেলের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি হলের সব সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। এরমধ্যে সাইকেল নিয়ে কেউ বের হয়েছে এমন কোনো ভিডিও ফুটেজ আমাদের চোখে পড়েনি। আমার হলে কোন ব্লকে কয়টা সাইকেল থাকে তা আমার কাছে কাউন্ট করা আছে সে অনুযায়ী সাইকেল সংখ্যা ঠিকই আছে। আমরা ধারণা করছি সেই শিক্ষার্থী হয়তো নিজের ভুলেই বাইরে কোথাও সাইকেল রেখে চলে গেছে।’

আবার চলতিমাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের ৩৩৩ ও ২৩৪ নম্বর কক্ষসহ আরো বেশ কয়েকটি তালাবদ্ধ রুম থেকে চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে আসলে তারা রুমের ভেতরের সব জিনিসপত্র এলোমেলোসহ ট্রাংক ভাঙা, ব্যাগ ও টেবিলে থাকা জিনিসপত্র এলোমেলো দেখতে পান। এছাড়া তাদের টেবিল ঘড়ি ও মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে বলে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেন।

জানতে চাইলে শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক পার্থ বিপ্লব রায় বলেন, হলের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রহরীর সংখ্যা বাড়ানো হলেও চুরির অভিযোগ উঠছে। নিরাপত্তাকর্মী থাকা সত্ত্বেও হলের তৃতীয় তলা থেকে চুরি হওয়া অস্বাভাবিক বিষয়। এ ঘটনার তদন্ত করতে আমি একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি।

চুরি রোধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছি। আজ আবারো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে কথা বলে আরো নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বন্ধ হল থেকে চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি বরাবরই হল প্রাধ্যক্ষদের হলের নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলি। আমি প্রতিটি হলে গিয়ে প্রাধ্যক্ষ, পুলিশ ও নিরাপত্তা প্রহরীদের সাথে বসে আলোচনা করে পরবর্তীতে যেন আর চুরির ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো। এবং হলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

Development by: webnewsdesign.com