বিশ্বনাথে দিনকে দিন অপরাধ বাড়ছে

সোমবার, ৩১ আগস্ট ২০২০ | ১:৫৩ অপরাহ্ণ

বিশ্বনাথে দিনকে দিন অপরাধ বাড়ছে

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বেড়েছে অপরাধ প্রবণতার হার। তুচ্ছ কারণেই হচ্ছে খুন-খারাপি। ঘটছে আত্মহনন ও গণ-ধর্ষণের ঘটনাও। গেল দেড় মাসের মধ্যেই এ উপজেলায় ৩টি হত্যা, ৫টি আত্মহত্যা ও একটি গণ-ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

সর্বশেষ গেল শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা রাতে খুন হন শফিক আলী নামের এক রিকশা চালক। এসব ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিশ্বনাথ উপজেলার মানুষ। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

সূত্র জানায়, গত ২৩ জুন উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের মনুকোপা গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মখলিছ মিয়া (৬৫) ও ওয়ারিছ আলী (৭০) নামের দু’জন খুন হন।

এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত ওয়ারিছ আলীর স্ত্রী নুরুন্নেছা। আসামি করা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলু মিয়াসহ ২০ জনকে। একই দিনে নিহত মখলিছ মিয়ার পুত্র আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলসহ ৩১ জনকে আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা করেন।

সর্বশেষ গেল শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় খুন হন রিকশা চালক শফিক আলী। গলায় রশি পেছানো অবস্থায় তার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিংরাইল থানার পারিল নওয়াদা গ্রামের সাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলার জানাইয়া রোডের মস্তাব আলীর কলোনিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কে কারা, কি কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানাতে পারেনি কেউ।

 

এদিকে গত ২ জুলাই দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁও গ্রামের জামিল আহমদের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের (২১) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফাতেমার বড়ভাই রুবেলের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, ফাতেমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৬ জুলাই হারপিক পান করে ৮ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান একই ইউনিয়নের দৌলতপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অফিস সহকারী আসমা শিকদার সিমলা (৪০)। এই আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে দৌলতপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডিকে অভিযুক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় কমিটির সদস্য আনোয়ার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৭ জুলাই সিলিং ফ্যানের সাথে লুঙ্গি দিয়ে ফাঁস নেন সদর ইউনিয়নের কারিকোনা গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ওমান ফেরত ছেলে বাবলা মিয়া (৩০)। সর্বশেষ, গত ৮ আগস্ট বসত ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস নেন খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী লুৎফা বেগম (২৭)।

একইদিন বিকেলে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ইছমাইল আলীর পুত্র সাবেক ফুটবলার আনোয়ার মিয়া (৫৬) বিষপান করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে মারা যান তিনি।

অন্যদিকে, গত ১ জুলাই লামাকাজী ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের ১৮ বছরের এক তরুণী গণ-ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার ১২ দিন পর তরুণী বাদী হয়ে ৩ জনকে অভিযুক্ত ও ২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার মূলহোতা ইসবপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে আনোয়ার মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এসব বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন-চার্জ শামীম মূসা সাংবাদিকদের বলেন, হত্যা-গণধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার প্রেক্ষিতে আমাদের আইনি কার্যক্রম অব্যাহত আছে। পাশাপাশি, আত্মহত্যা রোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছে পুলিশ।

Development by: webnewsdesign.com