সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: আহত ২০

সোমবার, ০৩ আগস্ট ২০২০ | ৭:৪০ অপরাহ্ণ

সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: আহত ২০

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের সুমিলপাড়া রেললাইন এলাকায় কেরামবোর্ড খেলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দু’দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১০ টায় ও রাত ১১টায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকা ও নারায়ণগেঞ্জর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে র‌্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় পুলিশ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।

সংঘর্ষ চলাকালীন সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবারও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 

পুলিশ ও প্রত্যাক্ষদশী জানায়, রোববার রাতে আদমজী রেললাইন এলাকায় কেরামবোর্ড খেলাকে কেন্দ্র করে একাধিক মামলার আসামি আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার ও শাকিল নামে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

পরে এ ঘটনার জের ধরে উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নাসিক প্যানেল মেয়র-২ মতিউর রহমান মতির সহযোগী।

অন্যদিকে শাকিল নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সহযোগী। বিষয়টি নিয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র-২ ও থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতির কার্যালয়ে দুই পক্ষকে ডেকে নিয়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়।

এ সময় মতিউর রহমান মতি তার লোকদের পক্ষ নিয়ে অপর পক্ষকে দোষারূপ করে বিচার করেছেন। এ অভিযোগ এনে সিরাজ মন্ডল গ্রুপের সহযোগীরা প্রতিবাদ করতে থাকে। এ সময় প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করা আশরাফের নির্দেশে মতিউর রহমানের সহযোগী পানি আক্তার গ্রুপের সদস্যরা চাপাতি, হকিস্টিক, রামদা, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় সিরাজমন্ডল গ্রুপের লোকদের উপর।

এতে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উভয় গ্রুপরে সংঘর্ষে আইনুল, সোহেল, কুট্টি, আমির, আহসানউল্লাহ, হৃদয়, সবুজ, আরিফ, আসাদুল, বেগম, আসিফ, হৃদয়, ইব্রাহীম, সবুজ ও রাসেলসহ ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদেরকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের সাধারণ চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে র‌্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল মন্ডল জানান, দুই পক্ষে মধ্যে সংঘর্ষ হলে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বিচার শালিসি করার জন্য উভয় পক্ষকে তার অফিস নিয়ে যায়। ওই অফিসেই তার লোকজন তার উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের উপর হামলার চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

 

নাসিক প্যানেল মেয়র-২ মতিউর রহমান মতি জানান, সিগারেটে আগুন ধরানোকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে আমার অফিসে এনে বিচার শালিসি করার সময় সিরাজ মণ্ডলের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। পরে আমি পুলিশ ডেকে এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হই।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মণ্ডলের ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মজিবুর রহমান মণ্ডলসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Development by: webnewsdesign.com