রাজশাহীতে একমাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার চিত্র

শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০২০ | ১০:৩৭ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে একমাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার চিত্র

উন্নয়ন সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার (লফস) অত্র জেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ নারী ও শিশুর উন্নয়নে কাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে লফস সংস্থার ডকুমেন্টেশন সেল থেকে রাজশাহীর প্রচারিত দৈনিক পত্রিকার সংবাদের ভিক্তিতে নিয়মিত নারী ও শিশু নির্যাতনের পরিস্থিতি প্রকাশ করে।

লফস মনে করে অত্র অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি বিভিন্ন মাত্রায় অবনতি ঘটছে। যৌতুক ও পরকীয়ার কারণে অধিকাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু টিভি সিরিয়াল পরকিয়াকে উৎসাহিত করছে। এছাড়া পারিবারিক কলহ ও প্রেম ঘটিত কারণে হত্যা-আত্মহত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে।

এক নজরে জুলাই মাসে অমানবিক কিছূ ঘটে যাওয়া ঘটনার চিত্র :
বাঘায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) কে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, বাঘায় ৬ বছরের এক শিশু কে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ, মোহনপুরে মোক্তার আলী (১৬) নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্র কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, দুর্গাপুরের মাড়িয়া গ্রামে ১১ বছরের শিশু ফুফা কতৃক ধর্ষণের শিকার,পবার হরিপুর ইউনিয়নের পদ্মার ওপারে চরমাজারদিয়াড় এলাকায় (১২) এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষিত হয়েছে, চারঘাটে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, নগরীতে শাহরিন (৮) নামে এক শিশুকে অমানবিক ভাবে নির্যাতন করেছে প্রতিবেশীরা, নগরীর কাটাখালীর পৌরএলাকায় ৪ নং ওয়ার্ড মাসকাটাদিঘী গ্রামে জ্যোতি (২২) নামের এক যুবতী বাসায় গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এদিকে, নগরীর চণ্ডিপুরে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূ সানজিদা আক্তার জুঁই (৩২) কে মারপিট করে নির্যাতন করা হয়েছে, তানোর উপজেলায় এক নারীর অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ, নগরীর দর্শন পাড়া ইউানয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৪ বছর ধরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ, নগরীতে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ, নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন কেচুয়াতৈল পাইক পাড়া এলাকায় এক নারী এয়ারপোর্ট থানার মিনা খাতুন (২৫) নামের কনস্টেবলের বিষপানে আত্নহত্যার অভিযোগ, নগরীর উত্তর নওদাপাড়ার মারুফা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে, নগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন দেবিশিং পাড়া এলাকায় শামীমা আরেফিন রুমা (২৮) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা, স্বামীর ওপর অভিমান করে নগরীর উত্তর নওদাপাড়ায় মারুফা আক্তার (১৯) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

অপরদিকে, চারঘাট পৌরসভার আস্করপুর গ্রামের সাজমা বেগম (১৯) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে, বাঘায় জোতনশী গ্রামে সাদিয়া আক্তার স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূ আহত, নগরীতে ধর্ম পরিচয় গোপন করে এক চিকিৎসক বিয়ে করে স্ত্রী হামিদা খাতুন মৌমিতা ও ৬ বছরের সন্তানকে ফেলে উধাও, পবার দামকুড়া থানাধীন গোবিন্দপুর এলাকায় আম্বিয়া বেগম (৪০) এর লাশ উদ্ধার, নগরীতে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ১৭ মাস ধরে এক আইনজীবীকে (২৭) ধর্ষণের অভিযোগ, মোহনপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রী জীবন নেছা (২৪) কে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ, রাজপাড়া বসুয়া অচিনতলায় সাদিয়া আক্তার জুই (৩২) কে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঘটনাগুলো সকলের জন্য উদ্বেগজনক।

লফস এর নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন, সংবাদ পত্রে প্রকাশিত ঘটনার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে যা প্রকাশিত হয় না বা কোন তথ্য জানা যায় না এমন বাস্তবতায়। রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকাশিত তথ্য হতাশাজনক।

রাজশাহী অঞ্চলে নারী-শিশু নির্যাতনসহ সার্বিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টাস্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। তিনি বলেন, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ক্রমশই অপরাধীরা উৎসাহিত হবে এবং অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। লফস সকল নারী-শিশু নির্যাতন ঘটনাগুলোরসুষ্ঠ তদন্ত স্বাপেক্ষে অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবী জানান তিনি।

Development by: webnewsdesign.com