পটুয়াখালীর বাউফলে খালের বাঁধ অপসারণ না করায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে

মঙ্গলবার, ০৭ জুলাই ২০২০ | ৮:১৬ অপরাহ্ণ

পটুয়াখালীর বাউফলে খালের বাঁধ অপসারণ না করায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে
পটুয়াখালীর বাউফল পৌর শহরের খালে কয়েকটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় আট মাস আগে দেয়া বাঁধ অপসারণ না করার ফলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত খালগুলোতে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় পানি পঁচা দুর্গন্ধে জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। এছাড়া মালামাল পরিবহনে সমস্যা হওয়ায় ব্যাবসা – বাণিজ্যসহ দৈনন্দিন কাজে দীর্ঘদিন পর্যন্ত খালের পানি ব্যবহার করতে না পারায় জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাউফল পৌর শহরের মধ্য দিয়ে তিনটি খাল প্রবাহিত ছিল। পৌর শহরের ময়লা আবর্জনা সহ প্রায় দশ হাজার পরিবারের ধোয়া মোছা কাজের ময়লা এবং বৃষ্টির পানি ওই তিনটি খাল দিয়ে বড় নদীতে চলে যেত।  পৌর শহরে ছয়টি সেতু নির্মাণের জন্য তিনটি খালেই বাঁধ দেয়া হয়েছিল। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য পৌরবাসী সাময়িক অসুবিধা মেনে নিয়েছিল।  কিন্তু কয়েক মাস আগে ছয়টি সেতুরই  মূল কাজ শেষ হয়ে গেলেও  বাঁধগুলো কেট দেয়া হয়নি।  ফলে বদ্ধ পানিতে ময়লা ও কচুরীপানার স্তুপ হয়ে সেগুলো পঁচে গলে দূর্গন্ধে খালগুলোর দুই পাড়ের মানুষের জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
বাউফল পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের আলগী নদী, বাউফল-নওমালা যৌতা খাল এবং মদনপুরা খালে জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্তে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৬টি সেতু নির্মাণ কাজজ শুরু হয়। বাউফল পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার প্রৌকশল অধিদপ্তর ওই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ণ করছেন।  সেতুগুলো নির্মাণ করতে গিয়ে  আট মাস পূর্বে মহিলা কলেজ, বাউফল বাজার, দাসপাড়া আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়,  বাউফল সরকারি কলেজ, সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদারের বাড়ির সামনের খাল এবং  বাংলা বাজার-পাবলিক মাঠ এলাকার খালে ছয়টি বাঁধ দেয়া হয়েছে।
এরফলে পৌর শহরসহ আসপাসের এলাকার পানি নিস্কাসন বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে,  মার্চ মাসের শেষের দিকে সেতুগুলোর  মূল নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বাঁধ অপসারণ করা হয়নি। অপরদিকে আলগী নদীর শাখা খালগুলো দিয়ে মদনপুরা, নওমালা, দাসপাড়া সহ একাধিক ইউনিয়নে পানি ওঠা নামা করে। বাঁধ অপসারণ না করায় খালে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোর চাষীরা সেচ সংকটে পড়ছেন। পৌর শহরর মধ্যের খালে বদ্ধ পানিত ময়লা আবর্জনায় বাড়ছে মশার উপদ্রব। বাঁধ অপসারণ না হওয়ায়  মদনপুরা পাল পাড়ার মৃৎ শিল্পীররা মাটি আনতে পরছেন না। ফলে তাদের রুটি রুজির মারাত্নক সমস্যা হচ্ছে।  বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, পঁচা পানির সংস্পর্সে নানাবিধ চর্মরোগ, টাইফয়েড রোগ ছড়ায়। এছাড়া দুর্গন্ধে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পরিবেশ বিজ্ঞানী পাপড়ি হাজড়া বলেন, পানির প্রবাহ বন্ধ হলে জীব বৈচিত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে এবং নষ্ট পানি ফসলি জমিত প্রবেশ করলে মাটির উর্বরতা  কমে যায়। তিনি বলেন,  নদী বা খালে বাঁধ না দিয় বিকল্প ব্যবস্থায় সেতু নির্মাণ করা হলে এসব ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব ।  বাউফল পৌর সভার সহকারী প্রকৌশলী মুঃ আতিকুল ইসলাম বলেন , খুব শীঘ্রই বাঁধ অপসারণ করা হবে।

Development by: webnewsdesign.com