মৌলভীবাজারের রাজনগরে অজ্ঞাত নারী হত্যাকান্ডে ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই মহিলাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে দুইজন অজ্ঞাত নারীকে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায় শিকার করে আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্ধী দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। সোমবার দুপুর আড়াই টায় দিকে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম(বার)।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, রাজনগর উপজেলার গয়াসপুর গ্রামের মৃত তরমুজ মিয়া ওরফে তম্মু মিয়া পুত্র জমশেদ মিয়া (৫২), একই উপজেলার চাঁনভাগ গ্রামের হোসেন খাঁর পুত্র বাদশা খাঁ(৩২), সৈয়দনগর (ভাঙ্গারহাট) ইলাছ মিয়ার পুত্র শিপন মিয়া (৩০), চাঁনভাগ (টিলাগাঁও) গ্রামের মজিদ মিয়ার স্ত্রী এনা বেগম ওরফে গোলাপী(৩৫), একই গ্রামের মনির মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৭) ও সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার রনিখাই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদির এর স্ত্রী সালমা বেগম (২৫)। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছেন বড়দল গ্রামের মৃত শেখ আবুল কালাম আজাদ এর পুত্র শেখ হুমায়ুন আহমদ(২৫)।
পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার) প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত মাসের ১২ জুন সকালে রাজনগর উপজেলার ২নং উত্তরভাগ ইউপিস্থ চাঁনভাগ দক্ষিন টিলা গ্রামে জনৈক মুকুল মিয়ার আকাশী বাগানে আকাশী গাছ বাগানের একটি গাছ থেকে অজ্ঞাতনামা মহিলার (১৮-২০) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে আলামত জব্দ ও ময়না তদন্তে গণধর্ষণ ও হত্যার আলামত পায়।
পরে আসামীদের ধরতে তার দিক নির্দেশনা মৌলভীবাজার সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে রাজনগর থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসিম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম, এস আই বিনয় ভূষন, এস আই কালাম ও এস আই অজিত কুমার তালুকদারসহ অন্যান্যদের নিয়ে গঠিত তদন্ত টিম বিষয়টি ব্যাপক তদন্তে নামে।
এক পর্যায়ে আসামী জমশেদ মিয়াকে আটক করে নিবিরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। দীর্ঘ কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী জমশেদ মিয়া স্বীকার করেন তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তার লাশ গাছে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। জমসেদ মিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাকী আসামীদের আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, অজ্ঞাত খুন হওয়া নারী একজন দেহব্যবসায়ী ছিলো। আসামী সালমা বেগমকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, অজ্ঞাতনামা মৃত মহিলার নাম ছদ্মনাম সুমি বেগম। তবে তাহার কোন ঠিকানা জানে না এবং জনৈক রুকশানা বেগম মৃত ছদ্মনাম সুমী বেগমকে আসামী সালমার নিকট দিয়েছিল।
আসামীরা সালমা বেগম এর কাছ থেকে দুই হাজার টাকা চুক্তিতে এক রাতের জন্য এনেছিল। তাকে প্রথম রাতে আসামীরা এনা বেগম ওরফে গোলাপীর বাড়ীতে রেখে অসামাজিক কাজ করছিল। দ্বিতীয় দিন কাজ করতে না দেয়ায় তাকে তারা খুন করে গাছে ঝুলিয়ে রাখে। তবে গ্রেফতারকৃত আসামীদের কাছ থেকে ঐ অজ্ঞাত নারীর পরিচয় এখনো পুলিশ সনাক্ত করতে পারেনি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম।