রবিবার, ২১ জুন ২০২০ | ১০:৪৫ অপরাহ্ণ
পটুয়াখালীর বাউফলে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হওয়া জোসনা বেগম(২২) নামের এক গৃহবধু শিশু সন্তান নিয়ে বাউফল থানায় দিন রাত ঘুরেও আইনি সহয়াতা পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধু আইনি সহায়তা না পেয়ে তার শিশু সন্তান নিয়ে বিচারের আশায় দারে দারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জোসনা বেগম ঢাকার মেঘনা এলাকার আবদুর রহিম বাদশার মেয়ে।
গৃহবধু জোসনা অভিযোগ করে বলেন, চার বছর আগে বাউফল উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের জালাল মাতব্বরের ছেলে সিদ্দিক মাতব্বরের সাথে তার পরিচয় হয়। সিদ্দিক ওই সময় ঢাকায় গাড়ি চালাতো। এক পর্যায়ে পরিচয় থেকে প্রেম এরপর উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় । দুই বছর পরে তাদেরর এক কন্যা শিশু হয়। বিয়ের পর জোসনা জানতে পারে, তার স্বামীর আরো এক স্ত্রী রয়েছে। এর পরেও তারা একই সাথে চার বছর ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
কিন্তু ৭-৮ দিন আগে তার স্বামী কিছু না বলে বাউফলের বাড়ি চলে আসে এবং এরপর মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নিয়ে কোথাও না পেয়ে নিরুপায় হয়ে অবুঝ সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে শুক্রবার সকালে বাউফল এসে মানুষের কাছ থেকে জেনে উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে স্বামীর বাড়ি যান। সেখানে যাওয়া মাত্রই স্বামী ও তার সতিন (প্রথম স্ত্রী) ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তেল বেগুনে জ্বলে ওঠে। এক পর্যায়ে স্বামী তাকে বেধরক মারধর করে।
পরে স্থানীয় মমিন উদ্দিন নামের এক চৌকিদার তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। শনিবার দুপুরে নির্যাতিত জোসনা স্বামী সিদ্দিক মাতুব্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে বাউফল থানায় গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার কোন অভিযোগ আমলে নেয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি ওই দিন রাতে থানার বরান্দায় শিশু সন্তান নিয়ে রাত কাটায়। জোসনা আক্ষেপ করে বলেন, থানার এক স্যার (তদন্ত ওসি আল মামুন) রাতে তার ও তার শিশু সন্তানের খাবার ব্যবস্থা করেন। রোববার দুপুর পর্যন্ত জোসনা বেগম থানায় অবস্থান নিলেও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তাকে কোন আইনি সহায়তা বা পরামর্শ দেননি। উপরন্ত ওসি তাকে থানা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
রোববার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী থানায় গিয়ে ওই গৃহবধূকে শিশু সন্তান নিয়ে থানার একটি কক্ষে বসে থাকতে দেখেন। এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জোসনা বেগম এর আগেও এ বিষয় নিয়ে থানায় কয়েকবার এসেছিলেন। আবার স্বেচ্ছায় স্বামীর কাছে চলে গিয়েছেন। তিনি কখনই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমি যতদুর জানি সে এবারেও স্বামীর কাছে চলে যাবেন।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৫টা) জোসনা তার স্বামীর বাড়ি যায়নি।