রাজশাহীর পুঠিয়ায় ত্রাণ চাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে লাঞ্ছিত

সোমবার, ০৮ জুন ২০২০ | ৯:৫৩ অপরাহ্ণ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় ত্রাণ চাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে লাঞ্ছিত
রাজশাহীর পুঠিয়ায় সরকারি ত্রাণ চাওয়ায় চেয়ারম্যানের কথিত প্রতিনিধির হাতে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের রোষানলে পড়েছেন ওই নারীর পরিবার।
গত ৩ জুন বিকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড পালোপাড়া-তাহেরের মোড় এলাকায় বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টুর স্থানীয় প্রতিনিধি মোতাহার আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নারী চামেলী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একজন নরসুন্দরের (নাপিত) কাজ করেন। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থেকে তার কাজ বন্ধ আছে। এর মধ্যে আমিও অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আছি। শুনেছি অনেক লোকজন এই সংকট মুহূর্তে সরকারি অনুদান পেয়েছেন। আমি কিছু সহায়তা পাওয়ার আশায় চেয়ারম্যানের লোক মোতাহার আলীর বাড়িতে যায়। সেখানে গেলে তিনি বলেন, তুমি সরকারি সুবিধা পাবে না। কেনো আমাকে ত্রাণ দেওয়া হবে না জিজ্ঞাসা করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে তার বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর দড়ি দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে আমার হাত বাধার চেষ্টা করলে পাশের বাজারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। সে সময় ৬ বছরের মেয়ে সুমনা খাতুন আমার কাছে গেলে তাকেও গলা ধাক্কা দেয় সে।’
ওই নারীর স্বামী শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শারীরিক লাঞ্ছিত করায় ঘটনার দিন রাতে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। এ ঘটনার পরের দিন চেয়ারম্যান আমাকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে উল্টো গালিগালাজ করেছে। এছাড়া থানায় অভিযোগ দেওয়ায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন।’
সংরক্ষিত ইউপি সদস্য শাহারা বেগম বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা চামেলী বেগমকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো খোঁজ খবর পাইনি।’
চেয়ারম্যানের কথিত প্রতিনিধি মোতাহার আলী বলেন, ‘ত্রাণ দেওয়ার মালিক আমি না। আমি শুধু চৌকিদারদের সঙ্গে থেকে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করি। আর আমি ওই নারীকে কোনো মারধর করিনি। বরং ওই নারী ত্রাণ না পেয়ে আমাকে গালিগালাজ করেছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টু ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই নারী ১০ টাকা কেজির ফেয়ার প্রাইজের চালের তালিকাভুক্ত। যার কারণে তাকে করোনা মহামারীর এই সময় বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীদের অনেক অভিযোগ আছে। আর মোতাহার আলী একজন ভালো মানুষ। সে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে।’
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি ত্রাণ চাওয়ায় চেয়ারম্যানের লোক একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে লাঞ্ছিত করেছে এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Development by: webnewsdesign.com