সিলেটে বিশ্বনাথে একটি বাড়ি ২৫ দিনের লকডাউন, ঔষধ ও খাবার নেই

শুক্রবার, ০৫ জুন ২০২০ | ১০:৪৪ অপরাহ্ণ

সিলেটে বিশ্বনাথে একটি বাড়ি ২৫ দিনের লকডাউন, ঔষধ ও খাবার নেই

সিলেট নগরে বসবাসরত এক সাংবাদিক দম্পতির করোনা পজিটিভ হওয়ায় গ্রামীণ জনপদ বিশ্বনাথে ওই সাংবাদিকের শশুর বাড়ি প্রথমে বেআইনীভাবে লকডাউন করে দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। গত ২৫ মে থেকে ওই বাড়ির লোকজনকে বের হওয়ার এবং ওই বাড়িতে প্রতিবেশিদের যাতায়াতের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে দেওয়া হয়। পরে ইউএনও’র মাধ্যমে ওই বাড়ির লোকদের নমুনা টেস্ট করানো হয়েছে। গত ২৫ মে থেকে লকডাউন দেওয়া হয়েছে ঠিকই ৩ জুন ওই বাড়ির একটি শিশুর করোনা পজেটিভ হলে ৪ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মাকর্তার নির্দেশে আরও ১৪ দিনের লকডাউন দেওয়া হয়। মোট ২৫ দিনের লকডাউনে পরিবারটি। কিন্তু কোন ধরণের ঔষধ দেওয়া হয়নি করোনা আক্রান্ত শিশুসহ পরিবারের লোকজনকে।

 

বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, উপজেলার অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান মো: নাজমুল ইসলাম রুহেল সম্পূর্ণ প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তাদের না খাইয়ে ও চিকিৎসা বিহীন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার নিমিত্তে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছেন। তাদের বাজার হাট,চাল ডাল ও ঔষধপত্র সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থল বিশ্বনাথ উপজেলার অহংকারী ইউনিয়নের বড়খুরমা গ্রামের কবির আহমদের বাড়ি।

 

গত ৩০ মে ওই বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনার নমুনা সংগ্রহ করেন। গ্রামের রুবেল নামের এক ছেলেকে দিয়ে ধরিয়ে বাড়ির শিশু নমুনা সংগ্রহ করান। এমনকি ওই সময় রুবেল বাড়ির নমুনা সংগ্রহের ফেসবুকে ধারণ করেন। পরীক্ষান্তে বাড়ির সাকিব নামের ১০ বছরের এক শিশুর রিপোর্ট পজিটিভ হলে উপজেলা প্রশাসন দিয়ে বাড়িটি আরো ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করিয়ে দেন। কিন্তু যে শিশুর রিপোর্ট পজিটিভ তার চিকিৎসার আদৌ কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি শিশুটির জন্য বাজার বা ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে আনতেও বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু করোনা পজিটিভ শিশুকে খোলা হাতে ধরে নমুনা সংগ্রহে সহযোগিতাকারী রুবেলকে স্টেহোম কোয়ারেন্টেইনে নেওয়া হয়নি বা তার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়নি, তার বাড়িও লকডাউন করা হয়নি।

 

 

যেখান শহর ও গ্রামে শত শত করোনা পজিটিভ লোকদের বাড়িঘর লকডাউন করা হচ্ছে না, সেখানে অলংকারি ইউপি চেয়ারম্যানের প্রথমাবস্থায় আক্রান্তবিহীন লকডাউন এবং পরবর্তীতে একটি শিশুরোগীর চিকিৎসা বন্ধ ও অন্যদের ক্ষেত্রে লকডাউন বৈষম্যকে এলাকাবাসী চরম অমানবিক বলে নিন্দার চোখে দেখছেন। এলাকাবাসী বিশ্বনাথের বড়খুরমা গ্রামের কবির আহমদের বাড়ি অবিলম্বে আনলক করে তাদের খেয়ে ও চিকিৎসা নিয়ে বাঁচা-মরার সুযোগ দানে সরকার ও প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

এ ব্যাপারে দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া কর্তৃক সাক্ষাৎকার নিলে অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান মো: নাজমুল ইসলাম রুহেল, অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন শনিবার তাদেরকে ত্রান দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে, এবং তাদেরকে চলাফেরা করতে কোন ধরনের বাধা দেয়া হচ্ছে না, শুধু বাড়ী লকডাউন করা হয়েছে। পরে দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে একাধিক বার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

Development by: webnewsdesign.com