শাবিতে তৃতীয় সমাবর্তন বুধবার : সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি

মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২০ | ১:১১ অপরাহ্ণ

শাবিতে তৃতীয় সমাবর্তন বুধবার : সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি

আগামীকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ তথা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় সমাবর্তন। বহুল আকাঙ্খিত এই সমাবর্তনকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সমাবর্তন প্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েটদের। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।

জানা গেছে, গ্র্যাজুয়েটদের বরণ করে নিতে এরই মধ্যে বর্ণিল রূপে সাজানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তা মেরামতকরাসহ গোলচত্ত্বরের পুনর্নির্মাণ করে সৌন্দয্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, নানান ডিজাইনের গেটসহ সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞাতার্থে বিভিন্ন তথ্য সংবলিত নির্দেশিকা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা সমাবর্তনের আনন্দ-আবেশকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। ফলে সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে যেন বইছে উৎসবের আমেজ।
সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। দিনরাত কাজ চলছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ১৭ টি উপ-কমিটি নিরন্তর প্রচেষ্টা করছে স্ব-স্ব কমিটির কার্যাদি সম্পন্ন করতে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সমাবর্তনে মোট ৬ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এদের মধ্যে স্নাতক ৪ হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তর ১ হাজার ১২৭ জন, পিএইচডি ২ জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ৬ জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলধারী ১২ শিক্ষার্থী ও স্নাতকোত্তরে ৮ শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে। অন্যদিকে অনুষদে প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
এছাড়াও সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আরও ৫০টি অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে ক্যাম্পাসে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স), পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্কবস্থানে রয়েছেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের ভিআইপি ব্যক্তি। তার নিরাপত্তার বিষয়টি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের মতো করে দেখভাল করছে। তারা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে, সেভাবে পালন করছি।
সমাজকর্ম বিভাগের ২০০৪-০৫ সেশনের শিক্ষার্থী সালমা খন্দকার বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল স্বপ্নের ক্যাম্পাস। এখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কতশত স্মৃতি। পড়াশোনা শেষ করে এখন স্বীকৃতির পালা। এ এক পরম পাওয়া। এ অর্জনে আমার সঙ্গে উচ্ছ্বসিত পরিবারের সদস্যরাও।’
একই বিভাগের ২০০০-০১ সেশনের শিক্ষার্থী শাহ মুহাম্মদ আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টা জীবনের সেরা সময়। বন্ধুদের সাথে স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখতে ছবি তুলছি। এ ছবিগুলোই ভবিষ্যতে বর্তমানের কথা মনে করিয়ে দিবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাবর্তনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শেষে পর্যায়ের কাজগুলো চলছে। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে যেন সুন্দর একটি সমবর্তন উপহার পাই- এমনটা প্রত্যাশা করি।

বুধবার বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হবে। সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দুটি সমাবর্তন পেয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এবং এর ৯ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

Development by: webnewsdesign.com