বাড়ছে শীত, বাড়ছে শীতজনিত বালাই

রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২০ | ৫:০২ অপরাহ্ণ

বাড়ছে শীত, বাড়ছে শীতজনিত বালাই

শীতে কাঁপছে দেশের মানুষ। বেকায়দায় রয়েছে গ্রামের সহায় সম্বলহীন মানুষ। বাড়ছে শীতজনিত রোগ বালাই।শীতে সর্দি, জ্বর, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশু। শীতের প্রভাব পড়ার পর থেকে হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আগামী তিনদিন এ তাপমাত্রা কমে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও কমে শীতের প্রভাব বেড়ে যাবে, এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় আরো অন্ধকারে ঢেকে যাবে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।

এদিকে, দেশের সর্ববৃহৎ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল এবং হৃদরোগ হাসপাতালে ঠাণ্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যাই বেশি। হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত রোগীদেরই সমস্যা হচ্ছে বেশি।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কবির আহমেদ বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে মানুষের সর্দি, জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশি হতে পারে। তাছাড়া পূর্বে যাদের হাঁপানি রোগী বা বক্ষব্যাধি যাদের রয়েছে, তাদের সমস্যা বেশি হবে। তবে, এ ঠাণ্ডা জ্বর ২ থেকে ৩ দিন স্থায়ী হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে এবং বিশ্রাম নিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

অপরদিকে, আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেছেন, গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ রাজধানীতে বইতে শুরু করেছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। এর সঙ্গে কমছে তাপমাত্রা। গত মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার (১৮ নভেম্বর) দেশের প্রায় সব এলাকায় তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ মান্নান বলেন, সম্প্রতি রাজধানীতে প্রতিদিন তাপমাত্রা এক ডিগ্রি করে কমছে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। বাতাসের কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আরও তিনদিন ঠাণ্ডা বাতাস থাকবে।

তিনি বলেন, আগামী তিনদিন বা ৭২ ঘণ্টা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাবে। তবে ঢাকায় ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমতে থাকবে। বৈরী এই আবহাওয়া ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বুধবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা পায়নি রাজধানীবাসী। দুপুরের দিকে সূর্যের আলো পাওয়া গেলেও আঁচ ছিল খুব সামান্যই, বরং কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের দাপট ছিল বেশি। সকালে অফিসমুখো লোকজন ঠাণ্ডায় কষ্ট পান বেশি। গতকাল সন্ধ্যার পর কিছু কিছু জায়গায় ছিন্নমূল, হতদরিদ্র মানুষদের আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ওইদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৯টার মধ্যে ঢাকায় লোকজনের চলাচলও কমে যায়।

হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় শীতের কাপড় চোপড়ের কেনাকাটাও বেড়েছে। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, বঙ্গমার্কেট, নিউমার্কেটসহ, মৌচাক, রাজধানী সুপার মার্কেট, গাউছিয়া, নুরম্যানসন, প্রিয়াঙ্গন শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় শীতের কাপড় বিক্রি করার দোকানগুলোতে ভিড় লক্ষ করা গেছে।

আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এরইমধ্যে তাপমাত্রা কমে ১০-এর ঘরে চলে এসেছে। রংপুর বিভাগের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ ১০ দশমিক ৮। বুধবার মধ্যরাতের মধ্যে এই তাপমাত্রা আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমছে।

এছাড়া ঢাকায় বুধবারের তুলনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমেছে, সঙ্গে বইছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি রাজধানীর পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বইতে পারে।

Development by: webnewsdesign.com