ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

আওয়ামী লীগ ছাত্রদের হাতে বই দেয়, বিএনপি দেয় অস্ত্র

শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০ | ৯:২৫ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগ ছাত্রদের হাতে বই দেয়, বিএনপি দেয় অস্ত্র

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রদের হাতে আমি বই তুলে দিয়েছিলাম আর খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন অস্ত্র। শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান-এরশাদসহ যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছেন খালেদা জিয়াসহ তারা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র, মাদক তুলে দিয়ে সন্ত্রাস, মানি লন্ডারিং, অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতাকে বৈধ করার একটা হাতিয়ার হিসেবে বহু মেধাবী ছাত্রের জীবন নষ্ট করেছেন। এমনকি সাত খুনের আসামিকে ছেড়ে দিয়েও রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, একটা সুস্থ রাজনৈতিক ধারাকে বারবার নষ্ট করার প্রচেষ্টা তারা সবসময় নিয়েছেন। যারাই এ রকম অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে আমরা জিয়াউর রহমান বলি, এরশাদ বলি এমনকি খালেদা জিয়া সবসময় আমরা দেখেছি তারা এই মেধাবী ছাত্রদের ব্যবহার করেছে লাঠিয়াল বাহিনী, অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, মাদক, মানি লন্ডারিং নানাভাবে তাদের ব্যবহার করা এবং তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আদর্শ ছাড়া, নীতি ছাড়া, সততা ছাড়া কখনো কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না। কোনো নেতৃত্ব দেশকে কিছু দিতে পারে না, জাতিকে কিছু দিতে পারে না। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। কোনো ধরনের সফলতা দেখাতে পারে না। সাময়িকভাবে অর্থ-সম্পদের মালিক হতে পারে, নাম-ডাক হতে পারে কিন্তু সেখানেই তারা বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু দেশের জন্য বা ইতিহাসের জন্য কিছু রেখে যেতে পারে না।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুও ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে উঠে এসেছেন কিন্তু তিনি একটা দেশ দিয়ে গেছেন, স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। দিতে পেরেছেন কেন কারণ উনার শক্তি ছিল, সততার শক্তি, নীতি ছিল সাহস ছিল। তিনি কখনো নীতির সঙ্গে আপস করেননি। যেটাকে তিনি সত্য বলে মনে করেছেন সেটার জন্য তিনি সর্বদা ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
এ সময় যারা রাজনৈতিক নেতা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করেন, স্বপ্ন দেখেন তাদের প্রত্যেকেরই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করতে চান বা গবেষণা করতে চান বা ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে জানতে চান তাদের জন্য পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার কাছে বঙ্গবন্ধুর নামে যে ফাইল আছে সেটা প্রকাশ করে যাব। সেখানে বঙ্গবন্ধুর নামে সব রিপোর্ট লেখা। তারা বঙ্গবন্ধুকে কোন চোখে দেখত সেটা সেখানে আছে। এটা প্রকাশ করলে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিতে চেয়েছিল অনেকে, তারা বলে তিনি তখন কারাগারে ছিলেন তাহলে কীভাবে ভাষা আন্দোলন করে। তিনি তো রাষ্ট্রভাষার মর্যাদার আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়েই তো জেলে ছিলেন। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাকে আপস করতে বলা হলেও তিনি আপস করেননি, যার কারণে তিনি আইনে পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। তিনি সবসময় নিজে কী পেলেন সেটা না ভেবে, জনগণ কী পেল সেটা ভাবতেন। বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনটাই ছিল তার জীবনের মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে নীতি নিয়ে আদর্শ নিয়ে গড়ে তুলতে হবে, এ সংগঠন থেকেই আগামী দিনের নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। আওয়ামী লীগের সব আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ বিরাট অবদান রয়েছে। তাই ছাত্রলীগকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ ছাত্রলীগ যেন নীতি-আদর্শ নিয়ে চলে যাতে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এই সংগঠন থেকেই আসে।

ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনুরোধ করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদকে ভারমুক্ত করতে। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভারপ্রাপ্ত থেকে ভারমুক্ত ঘোষণা করলাম। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এখন ভারমুক্ত।

Development by: webnewsdesign.com