সিলেটের মজুমদারী এলাকার তরঙ্গ ৬/৯-এর সিএনজি চালক জুবায়ের আলীর ছেলে ইয়াবা বাপ্পী সিলেট এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তার প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারী থাকলেও তার নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানায় বসত করে না বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।
ইয়াবা বাপ্পী তার মাদক ব্যবসার পাশাপাশি সিলেটের মধ্যে গাড়ি চুরির এক বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই সিন্ডিকেটের মধ্য দিয়ে তার নেতৃত্বে মোটর সাইকেল, সিএনজি, প্রাইভেট কার, ও দামি দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি চুরি হচ্ছে। এই সাম্রাজ্য ইয়াবা বাপ্পী নিরবে পরিচালনা করে যাচ্ছে। তার পরিচালনায় চলছে সিলেটে অপরাধের রাজ্য। এসব অপরাধে বেশিরভাগই ইয়াবা বাপ্পী থাকে ধরাছোয়ার বাইরে। শুধু তাই নয়, ভারত থেকে কসমেটিক্স সহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালানের ব্যবসা করে আসছে বাপ্পী।
জানা গেছে, ইয়াবা বাপ্পীর ভারতীয় চোরাচালান নিয়ে অনেক নিরীহ লোক জেল হাজতে আছে। ইয়াবা বাপ্পীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। একটি মামলা নং- ২। তারিখ ৬/৯/২০১৫ ইংরেজি। যার চার্জশিট নং-১৯। তারিখ ৩১/১২/২০১৭ইংরেজি। জালালবাদ থানার মামলা এটি। ধারা : ৩৭৯/৪১১ দ.বি- ৩৪। এই মামলা হলো একটি নিরীহ লোকের সিএনজি গাড়ি চুরির মামলা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবা বাপ্পী ও তার কয়েকজন সহযোগী মিলে প্রথমে গাড়িটি জালালাবাদ থানাধীন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ভাড়া নেন। তারপর গাড়ির চালককে নিয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থানাধীন লাক্কাতুড়া চা বাগানে নিয়ে গিয়ে চালককে হাত-পা ও মুখ বেঁধে চালককে বাগানে ফেলে গাড়িটি নিয়ে চলে যান ইয়াবা বাপ্পী ও তার সহযোগিরা। তারপর গাড়িটা নিয়ে গিয়ে ইয়াবা বাপ্পী দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকার লাউয়াইয়ে একটি ওয়ার্কশপে রাখেন এবং সেখানে গাড়ির ইঞ্জিন নাম্বার ও চেসিস নাম্বার বদল করে একটি মনগড়া নাম্বার বসিয়ে সেই গাড়ি অন্য আরেক জায়গায় বিক্রি করে দেন। পরে মামলা হওয়ার পর জালালবাদা থানার এস.আই আতিক আহমেদ অনেক পরিশ্রম করে গাড়িটি ইয়াবা বাপ্পীর কাছ থেকে উদ্ধার করেন। পরে এই মামলায় ইয়াবা বাপ্পীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। জেল থেকে জামিনে বেরিয়েই ইয়াবা বাপ্পী আবারও গাড়ি চুরিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেন এবং মামলা বাদি মো. আশিক মিয়াকে নানা হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। তবু বাদি আশিক মিয়া এক চোরের হুমকি ধমকিকে পরোয়া না করে মামলা পরিচালনা করেই যাচ্ছেন। ইয়াবা বাপ্পী ইদানিং নতুন একটি অস্ত্র হিসেব ব্যবহার করছে তার একটি ফেসবুক পেইজ। এই ফেসবুক পেইজে গাড়ির মালিক ও তার মামলার বাদিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খারাপ স্ট্যাটাসও দেন। এমনকি তার ইয়াবা ব্যবসা ও গাড়ি চুরির এবং চোরাচালের বিরুদ্ধে যে কথা বলেন কিংবা এসবের খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকের কাছে পৌঁছে দেন সে এইসব লোকের বিরুদ্ধেও ফেসবুক পেইজে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যাচার করে লেখালেখি করেন।
একাধিক জনতার অভিযোগ রয়েছে তার অবৈধ কার্যাকলাপের প্রতি। তার এই অবৈধ কার্যকলাপের জন্য তার বাবা- যদিও তিনি একজন সিএনজি চালক তবু তিনি একজন খুব ভালো লোক- তার সমাজ ধ্বংসমূলক কার্যকলাপের জন্য তাকে তার বাবা জুবায়ের আলী ২০১৪ সালে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এই সিলেট শহরে এখন ইয়াবা বাপ্পী বিভিন্ন এলাকায় বসত করে। কখনো কোনো হোটেলে কিংবা কখনো কোনো ভাড়াটে বাসায়। তার নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সমাজের সুশীল মানুষের দাবি- এরকম ইয়াবা বাপ্পী যেন সমাজে যেন আর তৈরি না হয়- এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
Development by: webnewsdesign.com